২০২৫ সালের ৭ই মে, ভারত “অপারেশন সিন্দুর” নামে একটি পরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই অভিযানটি ছিল ২২শে এপ্রিল, পাহলগাম এলাকায় ঘটে যাওয়া নির্মম জঙ্গি হামলার প্রত্যুত্তর, যেখানে ২৮ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী প্রাণ হারান।
পাহলগাম গণহত্যা: সংঘর্ষের সূচনাবিন্দু
কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র পাহলগামে সংঘটিত হামলায় দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী The Resistance Front (TRF)। ভারত সরকার সরাসরি পাকিস্তানের প্রতি অভিযোগ তোলে যে তারা এই গোষ্ঠীকে আশ্রয় ও সহায়তা প্রদান করে। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে হামলার প্রমাণ ও জনমত ভারতকে কড়া প্রতিক্রিয়ার দিকে ঠেলে দেয়।
অপারেশন সিন্দুর: লক্ষ্যবস্তু ও বাস্তবায়ন কৌশল
আকাশপথে সুনির্দিষ্ট হামলা
ভারতের রাফাল জেট ও Su-30 বিমান থেকে ছোঁড়া হয় SCALP ও AASM হ্যামার ক্ষেপণাস্ত্র। এই আঘাতগুলো নিচের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে কেন্দ্রীভূত ছিল:
- বাহাওয়ালপুর – লস্কর-ই-তৈয়বা ক্যাম্প
- মুরিদকে – জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান ঘাঁটি
- তেহরা কালান
- শিয়ালকোট
- ভিম্বর
- কোটলি
- মুজাফফরাবাদ – পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে অভিযানটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করা হয়।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা পদক্ষেপ
পাকিস্তান এ হামলাকে “অঘোষিত যুদ্ধ” বলে আখ্যায়িত করে। তাদের দাবি অনুযায়ী:
- ভারতীয় তিনটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয় (রাফাল, MiG-29 ও Su-30)
- বাহাওয়ালপুরের একটি মসজিদে ভারতীয় হামলায় ৯ জন বেসামরিক নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়
- ভারতীয় একটি UAV ধ্বংস করা হয় বর্ণালা সেক্টরে
সীমান্ত সংঘর্ষ ও সেনা মোতায়েন
গোলাগুলির তীব্রতা
অপারেশনের পরপরই পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর ভারী মর্টার শেল নিক্ষেপ শুরু করে। জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে এতে ৩ জন ভারতীয় বেসামরিক প্রাণ হারান।
সামরিক সংঘাত
ভারত দাবি করে, তাদের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। অপরদিকে পাকিস্তান দাবি করে, তারা একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
- ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত: ভারত চেনাব নদীর পানি প্রবাহ সীমিত করে দেয়, পাকিস্তানে পানি সরবরাহ ৯০% হ্রাস পায়।
- দূতাবাস কার্যক্রম স্থগিত: দুই দেশ পরস্পরের কূটনীতিক বহিষ্কার করে এবং ভিসা সেবা স্থগিত রাখে।
- জাতিসংঘ ও চীনের উদ্বেগ: উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
“অপারেশন অভ্যাস”: ভারতের বেসামরিক প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি
৭ই মে সারা ভারতে একযোগে পরিচালিত হয় অপারেশন অভ্যাস নামের মহড়া:
- ব্ল্যাকআউট ড্রিল: সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত শহরজুড়ে ব্ল্যাকআউট অনুশীলন
- বোমা আশ্রয় মহড়া: মানুষকে বোমা আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়
- সাইরেন পরীক্ষা: প্রতিটি জেলায় এয়ার রেইড সাইরেন সক্রিয় করা হয়
মানবিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
- পর্যটন ও বাণিজ্যে ধস: ফ্লাইট বাতিল ও সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় পর্যটন হঠাৎ ভেঙে পড়ে
- চাষাবাদে সংকট: পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলে পানি সংকটের কারণে ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে আসে
- বাস্তুচ্যুতি: সীমান্তবর্তী বহু গ্রামে গোলাবর্ষণের ফলে মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে
সংঘাতের ভবিষ্যৎ রূপরেখা
অপারেশন সিন্দুর প্রমাণ করেছে, ভারত আর কূটনীতির উপর পুরোপুরি নির্ভর করে না। এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে জঙ্গি কার্যকলাপে ছেদ ঘটালেও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভবিষ্যৎ সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রবল।