একের পর এক বেরিয়ে আসছে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদের হদিস। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এর পর গুঞ্জন উঠে সাবেক ডি এম পি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে। এবার বের হতে শুরু হল সাবেক ডিবি প্রধান হারুন বা ডিবি হারুনের সম্পদের পাহাড়।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন এর হোসেনপুর গ্রামের পাশের হাওড়ে প্রায় ৩০ একর জমির উপর দীপের মত দাঁড়িয়ে আছে একটি বিলাস বহুল রিজোর্ট। শত কোটি টাকার এই রিজোর্টে রয়েছে হেলিপেড, বিত্তশালিরা প্রায়ই হেলিকপ্টারে করে একান্তে নিরিবিলি অবকাশ যাপনে আসেন এই প্রিসিডেন্ট রিজোর্টে। রাজকীয় এই রিজোর্টের মালিক সাবেক ডিবি প্রধান হারুনুর রশিদ।
২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চালু হয় বিলাশবহুল এই প্রেসিডেন্ট রিজোর্ট। চোখ ধাদানো এই রিজোর্টটিতে রয়েছে ২০ টি দোতলা কটেজ এ রয়েছে ৪০ টি শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ। আরো আছে রেস্টুরেন্ট, পার্টি সেন্টার, গেইম জোন ও ওয়াচ টাওয়ার। এই রিজোর্টের পাশেই হোসেনপুর গ্রামে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন এর বাড়ি।
শুধু এই রিজোর্ট নয় তার পাশেই নিরিহ কৃষকদের ৩-৪ শ একর জমি দখল করে এগ্রোফার্ম করার পায়তারা করছিলেন এই ডিবি হারুন। শতাধিক একর জমি বাধ দিয়ে দখল করে নিয়েছিলেন এর আগেই। বর্ষা চলে আসায় কাজ সম্পন্ন করতে পারেন নি। মিঠামইন এর হোসেনপুর থেকে অস্টগ্রামের ভাতশালা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় বাধ নির্মান করা হয়েছে হারুন এর ছোট ভাই শাহরিয়ার এর নেতৃত্বে। গত সাত ও তের আগস্ট দুই দফা সরেজমিনে ডিবি হারুন এর এলাকায় গিয়ে ভুক্তভুগি ও নানা শ্রেনী পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ করে তার বিপুল পরিমান সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন একজন পুলিশের কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে এত অর্থবিত্তের মালিক হন।
জানা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন হারুন। লেখা পড়া শেষে ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের শেষ সময়ে হারুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশে চাকরি পান। ২০০১ সালে বি এন পি সরকার ক্ষমতায় এলে হারুনের পদায়ন আটকে দেয়। তারপর ১-১১ এর সময় হারুনের চাকরি স্থায়ী হয়।
মুলত গাজিপুরের এস পি থাকা কালীন হারুনের কপাল খুলে যায়। গাজিপুর ও নারায়ণগঞ্জ এর এস পি থাকা কালীন সময় থেকেই হারুন তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে বাড়ির পাশের হাওড়ে জমি কিনতে শুরু করেন। সেখানে নামে বেনামে তার কমপক্ষে ১০০ একর জমি রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া দখল করেছেন শতাধিক একর অন্যের জমি। এছাড়া দেশের বাইরেও শত শত কোটি টাকার সম্পদ থাকার গুঞ্জন রয়েছে।
সাবেক এই ডিবি প্রধান হারুনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এসব সম্পদ অর্জনের ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তার ভাই প্রেসিডেন্ট রিজোর্ট ও এগ্রোফার্মের এম ডি ডাক্তার শাহরিয়ার এর ফোন ও বন্ধ রয়েছে। রিজোর্টে গিয়ে এমডির সঙ্গে কথা বলার চেস্টা করলে গেটে থাকা নিরাপত্তা রক্ষিরা জানান দেশের এই পরিস্থিতে রিজোর্টে কাউকে এলাউ করা হচ্ছে না।
তথ্য সূত্রঃ https://fb.watch/tZZ0IpOzY7