
হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ পৃথিবীজুড়ে একটি নিরব ঘাতক রোগ হিসেবে পরিচিত। হাইপারটেনশন বা হাই প্রেশারকে বাংলায় উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। আমাদের দেশেও অসংখ্য মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। সিমিক্ষায় দেখা গেছে দেশে প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। আমাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জিবনযাপনের ফলে দিন দিন হাই প্রেসার এর রোগী বেরে চলেছে। হাই প্রেসার এর নাম শুনেন নি বা কারো আশেপাশে হাই প্রেসার এর রোগী নাই এমন খুজে পাওয়া যাবে না। আবার অনেকে হয়তো জানেই না সে হাই প্রেসার এ ভুগছে। সঠিক সময়ে রোগ নির্নয় ও চিকিৎসা নেয়া না হলে হাই প্রেসার এর কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মত মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই রোগে আক্রান্তরা যেকোন সময় রক্তচাপ বেরে যাওয়ার আতংকে থাকেন। রক্তচাপ বেরে গেলে ঘরোয়া কিছু পদক্ষেপ নিলে খারাপ কিছু হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আজকে আলোচনা করব দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর কিছু উপায় সম্পর্কে।
হাই প্রেসার হওয়ার কারণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপে রোগীদের সব সময়ই সতর্ক থাকতে হবে। কেননা এ রোগটিই অন্যান্য শারীরিক নানা জটিলতা তৈরি করে। এটি রক্তনালীর সমস্যা তৈরি করার পাশাপাশি স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের কারণও হয় অনেক সময়।
অথচ বেশিরভাগ হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রায়ই খাওয়ার সময় বেমালুম ভুলে যান নিজেদের শারীরিক অসুস্থতার কথা। যার কারণে হাইপ্রেশারের রোগীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রেশার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
রক্তচাপ তখনই বারে যখন ধমনিতে রক্তের অত্যধিক চাপ পড়ে। মূলত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন কিংবা ভুল ডায়েটে অনেকেই প্রেশার হাই হওয়ার সমস্যায় ভোগেন। অনেকে আবার দুশ্চিন্তা, অপর্যাপ্ত ঘুম ও বংশগতির কারণেও এ সমস্যায় ভোগেন। এ সময় ঘাবড়ে না গিয়ে বাড়িতেই প্রথমে নিন প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ।
হাই প্রেশারের লক্ষণসমূহ
১২০/৮০ মিলিমিটার পারদ চাপকে স্বাভাবিক রক্তচাপ ধরা হয়। এবং পারদচাপ ১৪০/৯০ মিলিমিটার এর বেশি হয় তখন ওই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার বলা হয়।
রক্তচাপ বেরে গেলে শরিরে তাৎক্ষণিক কিছু জটিলতা দেখা দেয়। যেমন: মাথা ঘোরানো, মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ভাব, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড় করা, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, শ্বাস-প্রশ্বাস এ অসুবিধা হওয়া ইত্যাদি।
প্রেসার হাই হলে করণীয়
প্রেশার হাই হওয়া একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি তখনই ঘটে যখন ধমনিতে রক্তের অত্যধিক চাপ পড়ে। এর ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে, বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকিও।
তাই অনলাইন সহায় হেল্থের প্রতিষ্ঠাতা ডা. তাসনিম জারা হাই প্রেশার দ্রুত নিয়ন্ত্রণের কিছু ঘরোয়া উপায়ের কথা জানিয়েছেন। আসুন জেনে নিই, হঠাৎ প্রেশার আরও বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাৎক্ষণিক কী করবেন:
- হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে গেলে শারীরিক চলাচল কমিয়ে দিন, শান্ত থাকুন। পারলে আরামদায়ক কোনো স্থানে বসুন বা এক পাশে শুয়ে পড়ুন। কেননা, এটি রক্তের চাপ কমতে সাহায্য করে।
- রক্তের চাপ কমাতে খেতে পারেন তেঁতুলের রস। তেঁতুলের রসের পরিবর্তে খেতে পারেন লেবুর পানি।
- আপনার খাদ্যতালিকায় আদা রাখুন। আদা একটি সুপারফুড। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও পেশি শিথিল করে।
- রক্তচাপ বেড়ে গেলে প্রক্রিয়াজাত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সেই সঙ্গে চর্বিযুক্ত খাবার, খাবারের লবণ, ধূমপান উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে এমন খাবারও এড়িয়ে চলুন।
- এ সময় চিনি, তেল, ঘি, মাখন, লবণ ও রেডমিট একেবারেই খাওয়া যাবে না।
- এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন। কারণ শরীর সঠিকভাবে হাইড্রেশন থাকলে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে।
- দ্রুত রক্তচাপ কমাতে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খান। এজন্য ডায়েটে রাখুন পটাশিয়াম যুক্ত ফল, টক দই। ওজন বেশি থাকলে সেটিও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি।
আরো পড়ুনঃ আঁচিল কি? কেন হয়? দূর করার উপায়
ডায়াবেটিস কি, লক্ষণ, কারণ এবং চিকিৎসা
বিয়ের আগে যেসব বিষয় জানা উচিত।