
স্কিনের উপর ছোট দানা বা ফুলকপির মত যে জিনিসগুলো দেখাযায় সুগুলো হল আঁচিল। আঁচিল হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) সংক্রমণে হওয়া ত্বকের একটি সাধারণ রোগ। এটি একটি সংক্রামক রোগ, ফলে শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়াতে পারে, এমনকি একজন থেকে অন্যজনেও ছড়াতে পারে।
যেকোনো বয়সেই আঁচিল হতে পারে, তবে শিশু ও কিশোর বয়সে এটি বেশি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির হতে পারে।
প্রথম দিকে আঁচিল ত্বকের রঙের ছোট ফুসকুড়ির মতো হয়ে থাকে। পরে ধীরে ধীরে আকারে বড়, অমসৃণ ও শক্ত ফুলকপির মত হতে থাকে। আঁচিল সাধারণত হাতে ও পায়ে বেশি দেখা যায়। তবে মুখ ও যৌনাঙ্গ ও শরীরের অন্য যায়গায় ও এটি হতে পারে। আঁচিল এ সাধারণত কোনো ব্যথা থাকে না। তবে যৌনাঙ্গের আঁচিলে চুলকানি হতে পারে।
আঁচিল কেন হয়?
আঁচিল এর সাথে জিনগত একটা সম্পর্ক আছে, অর্থাৎ বংশে বাবা-মা, দাদাদের থাকলে একই পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরও হতে পারে।
আঁচিল হওয়ার সঠিক কারণ এখনও জানা যায় নি, তবে গবেষনায় উল্লেখযোগ্য নিচের কারণগুলো পাওয়া গেছেঃ
যে সব মানুষের ওজন তুলনামূলক ভাবে বেশি এবং যারা স্থুলকায় তাদের আঁচিল হওয়ার হার অনেক বেশি।
অতিরিক্ত ওজন টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা যায়, যাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে তাদের আঁচিল অন্যদের চেয়ে বেশি হয়। যেহেতু, টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলে রক্তে সুগার লেভেল বেশি থাকে, সেহেতু আমরা সহজে বলতে পারি আঁচিল এর সাথে ইনসুলিন নামক হরমোনের সম্পর্ক আছে।
ইনসুলিন মাংসের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং এটা ত্বকের কোষের প্রতিরুপ সৃষ্টিতেও ভুমিকা রাখে। এভাবে পরবর্তীতে আঁচিল বিকাশেও ভুমিকা রাখে। একারণে আঁচিল হওয়াকে ডায়াবেটিসের পূর্ব সতর্ক সংকেত হিসেবে ধরা হয়।
যাদের Crohn’s disease থাকে তাদের আঁচিল হওয়া মোটামুটি সাধারণ। এটা একধরণের chronic condition যেটা পরিপাক নালিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে অতিসার (diarrhea), পেট ব্যথা, খিঁচুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য, মলদ্বারে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাদের Crohn’s disease আছে, তাদের আঁচিল সাধারণত পায়ু পথের মুখে হয়ে থাকে।
আঁচিল দূর করার উপায়
প্রসাধনী ব্যবহারের মাধ্যমে আঁচিল কমানো যায়। বাড়তি কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না অনেক ক্ষেত্রে। খুব বেশি সমস্যা না হলে এগুলো নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলে।
কিছু ক্ষেত্রে আঁচিল থেকে রক্ত পড়া, ব্যথা বা সংক্রমণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
লেজার বা ইলেক্ট্রো কাটারি’র সাহায্যে আঁচিল দূর করা যায়। এটা কোনরূপ ক্ষতি ছাড়া আঁচিল দূর করার সহজ উপায়।
অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে অবস করে লেজারের সাহায্যে আঁচিল কেটে নেওয়া হয়। আর সহজেই আরোগ্য লাভ করে।
যেহেতু আঁচিলগুলো ত্বকের উপরে থাকে তাই খুব বেশি একটা ক্ষত সৃষ্টি হয় না। এই পদ্ধতি একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের অধীনে সম্পন্ন করতে হয়।
এছাড়া জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমন- ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম করা, সুষম খাবার খাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে আঁচিল তৈরি হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায়।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমানোর উপায় ও খাবার তালিকা
বিয়ের আগে যেসব বিষয় জানা উচিত।
গর্ভাবস্থায় যে ৭টি খাবার খাবেন না