ডায়াবেটিস রোগীর পায়ের যত্ন

পা মানব দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ডায়াবেটিস রোগের কারণে পায়ে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। রক্ত সরবরাহএর অসুবিধার কারণে স্নায়ুতন্ত্রের অকার্যকারিতা ও পায়ের অনুভুতি শক্তি কমে যায়, ফলে পায়ে আঘাত লেগে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। এইভাবে পায়ে পচনশীল ঘা হতে পারে, ফলশ্রুতিতে পা কেটে ফেলতে হয়। পৃথিবীতে যত রোগীর পা কাটা লাগে তার মধ্যে ৮৪% হল ডায়াবেটিক পা।  সকল ডায়াবেটিস রোগীকে তাই পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে হয়। তাই সকল ডায়াবেটিস রোগীর পায়ের যত্ন নেয়া আবশ্যক 

 পায়ের যত্নের তিনটি মূল নীতি

  • পায়ে যেন কোন ক্ষত না হয় বা কোন আঘাত না লাগে 
  • পা যেন সব সময় পরিষ্কার ও শুকনা থাকে
  • পায়ে কোন অসুবিধা দেখা দিলে বা সংক্রমক রোগ হলে অবহেল না করে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী।

পায়ের অসুবিধা এড়াতে কয়েকটি বেবস্থা গ্রহন করা উচিৎ

খালী পায়ে না হাটা, নরম ও পরতে আরাম লাগে এমন জুতা পরে হাঁটা, মোজা ছাড়া কখনোই জুতা না পরা, পায়ে অত্যধিক গরম পানি না ঢালা।

পায়ে কোন আঘাত না লাগানো ও কোন ক্ষত যেন না হয়। পায়ের রঙের পরিবর্তন চোখে পরলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

নিয়মিত পায়ের বারতি নখ কাটবেন, বিশেষভাবে সাবধানতা অবলম্বন করবেন, জাতে আঙুলে আঘত না লাগে। নেইল কাটার ব্যাবহার করুন। 

পায়ের কড়া নিজে কাটবেন না। ময়লা বা ভিজা মোজা পরবেন না।

রক্ত চলাচলের জন্য রোজ নিয়মিতভাবে পায়ের ব্যায়াম করুন।

প্রতিদিন ভাল ভাবে পা ধুয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পা মুছে ফেলবেন। পায়ের দুই আঙুলের মাঝের জায়গা যেন ভিজে না থাকে।

ভালভাবে দেখার জন্য আয়না ব্যাবহার করতে পারেন বা অন্যের সাহায্য নিতে পারেন। 

পায়ের মারাত্মক ক্ষতি এড়াতে জরুরি করণীয়

নিন্মলিখিত সমস্যা গুলির জন্য অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবেঃ-

পায়ের ত্বকের রঙ পরিবর্তন ( লাল বা কালো হয়ে যাওয়া)

পায়ের ত্বকের তাপমাত্রা পরিবর্তন ( পা ঠাণ্ডা হওয়া বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া)

পায়ের পাতা ফোলা, পায়ের মাংসপেশীতে বাথা, পায়ের ঘা দেরিতে শুকান, নখের কনা বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষত সৃষ্টি।

পায়ে অতিরিক্ত চাপজনিত কারণে চামড়া শক্ত হয়ে যাওয়া।

চামড়া ফেটে যাওয়া, বিশেষ করে পায়ের গোঁড়ালিতে।

পরিশেষে বলতে হয় ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য পায়ের যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন ভাবে চলাফেরা করতে হবে যেন পায়ে কোন আঘাত না লাগে। পা সব সময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখতে হবে। এবং উপরে উল্লেখিত কোন আস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দিলে দেরি না করে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *