পরিবার বাচ্চা কাচ্চা বা বন্ধুদের নিয়ে সারাদিন কোথাও বেরাতে চাইলে চলে যেতে পারেন ঢাকার কাছে নরসিংদি জেলার ড্রিম হলিডে পার্কে। এটি নরসিংদী জেলার ঢাকা সিলেট মহাসড়কের সাথে অবস্থিত। পার্কটির নামকরণের সার্থকতা আছে বলতেই হয়। বাচ্চারা এই পার্কে গেলে তাদের ড্রিমলেন্ডে গিয়েছে মনে হবে নিশ্চিত। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও বেশি রাইড সম্বলিত আধুনিক পার্কগুলোর মধ্যে অন্যতম। এখনে ২৫ টির ও বেশি রাইড রয়েছে। ঢাকা থেকে যেতে সময় লাগে এক থেকে দেরঘন্টা। একদিন সময় করে ঘুরে আসুন ড্রিম হলিডে পার্ক থেকে
ড্রিম হলিডে পার্কের টিকেটের মূল্যঃ
ড্রিম হলিডে পার্কের প্রবেশ মুল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৩২০ টাকা ও শিশুদের জন্য ২২০ টাকা। এটা দিয়েই ড্রিম হলিডে সাফারি পার্ক এ প্রবেশ করতে পারবেন। আপনি চাইলে ২০ রকম রাইড সহ কাপল পেকেজ বা ফেমেলি পেকেজ নিতে পারবেন। কাপল পেকেজের মূল্য ২৫০০ টাকা এবং চার জনের ফেমেলি পেকেজের মূল্য ৪৫০০ টাকা। এছাড়া শুধু প্রবেশের টিকেট করে ভিতরে প্রবেশ করে যেটা যেটা ভাল লাগে চরতে চান শুধু সেগুলোর টিকেট করে চরতে পারবেন। রাইড ভেদে টিকেট এর মূল্য ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
ড্রিম হলিডে পার্কে যা যা আছেঃ
ড্রিম হলিডে পার্কে প্রবেশ করেই আপনার চোখে পরবে পৃথিবীর একটা মানচিত্রের তোরন। এর পরি আছে পার্কের কোন দিকে কি আছে তা জানার সুবিধার্থে পার্কের ম্যেপ।
তারপর ই আছে বাচ্চাদের জন্য চাইল্ড জোন। যেখানে আছে বাচ্চাদের জন্য নানা রকম রাইডের ব্যবস্থা।
চাইল্ড জোনের পরেই আছে ড্রিম হলিডে ওয়াটার পার্ক যেটা পার্কের অন্যতম আকর্শন। ওয়াটার পার্ক খোলা থাকে দুপুর ১২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত। ওয়াটার পার্কের পরেই আছে অত্যন্ত সুন্দর করে সাজানো বিশাল একটা লেক, যেখানে চাইলে বোট রাইড করতে পারবেন। তার কিছুটা সামনে মুর্তির মাধ্যমে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আমাদের গ্রাম বাংলার পরিবেশ।
তারপর আছে ভুতের বাড়ি, কাউকে ভয় দেখাতে চাইলে ভুতের বাড়িতে নিয়ে গেলেই হবে। আর তার পাশে আছে বুলেট ট্রেন। পাশেই পেয়েযাবেন আরো কিছু রাইড। এখানে আরো আছে ভুতের আড্ডাখানা।
আছে নদীর ভিতর টানেল মানে পানির নিচ দিয়ে পারাপারে রাস্তা। আরো আছে পদ্মা ব্রিজ ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আদলে করা মিনি পদ্মা ব্রিজ ও স্যাটেলাইট। এখানে লেকের মাঝখানে একটি দিপ বানিয়ে সেটিতে মুর্তির মাধ্যমে গ্রামীন জীবনাচার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। লেকে বোটে করে আরো দেখা যায় জীবন্ত হরিন। আরো আছে প্রাচীন মানুষের ভাসকর্য। অন্য একটি দিপে বানানো হয়েছে ডলফিন, কুমির সহ অনেক প্রানী।
এখানকার আরো একটি বিশেষ আকর্শন ক্যাবলকার যাতে উঠলে প্রায় পুরো পার্কটি দেখা যায়। আরো আছে কাইট ফ্লাইয়িং বা ঘুরিতে চরা। তাছাড়া নাগরদোলাতো আছেই।
এখানে আরো আছে পিকনিক স্পট ও একটি ঐতিহ্যবাহী জামদানি কাপরের আউগটলেট।
ড্রিম হলিডে পার্ক কিভাবে যাবেন?
ঢাকার কমলাপুর, গুলিস্তান, সায়দাবাদ, মহাখালী থেকে অনেক বাস নরসিংদী যায় ভাড়া ১০০ টাকা। এছাড়াও যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, চিটাগাংরোড, কাচপুর এসব জায়গা থেকেও নরসিংদির বাস পাওয়া যায়। নরসিংদির বাস ছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতকারি কিশরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বা সিলেটের যেকোন লোকাল বাসে করেও ড্রিমহলিডে পার্ক যেতে পারবেন। যেই বাসেই যান না কেন ড্রিম হলিডে পার্ক নামিয়ে দিতে বললেই নামিয়ে দিবে।
ড্রিম হলিডে পার্ক ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর বা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে যেতে পারবেন। এগারসিন্দুর ট্রেন কমলাপুর থেকে ছাড়ে সকাল ৭.১৫ মিনিটে আর বিমান বন্দর স্টেশন থেকে ছাড়ে ৭.৪৫ এ। তিতাস কমিউটার ট্রেন কমলাপুর থেকে ছাড়ে সকাল ৯.২৫ মিনিটে আর বিমান বন্দর স্টেশন থেকে ছাড়ে ৯.৫৫তে। কিশরগঞ্জ এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছাড়ে সকাল ১০.৪৫ আর বিমান বন্দর স্টেশন থেকে ছাড়ে ১১.১৫ তে। চট্রলা এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছাড়ে দুপুর ১.০০ টায় আর বিমান বন্দর স্টেশন থেকে ছাড়ে ১.৩০ এ। নরসিংদী ট্রেন স্টেশন নেমে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে গিয়ে যেকোন গারিতে ড্রিম হলিডে পার্ক যেতে পারবেন। অথবা স্টেশন থেকে সিএনজিতেও যেতে পারেন।
তাছাড়া নিজস্ব বা রিজার্ব যেকোন গারিতে যাওয়ার সুযোগতো আছেই।
ড্রিম হলিডে পার্ক এ কোথায় খাবেন?
ড্রিম হলিডে পার্কে ও বাইরে বেশ কয়েকটি হোটেল রেস্টুরেন্ট আছে সেখান থেক চাইনিজ ও বাংলা খাবার খেতে পারবেন। অথবা চাইলে একটু সামনে পাচদোনা স্ট্যান্ড এ গিয়েও যেকোন হোটেল রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার পর্ব সেরে নিতে পারেন।
যোগাযোগঃ
পিকনিক বা কোন অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং করতে যোগাযোগ করুন –
মোবাইলঃ 01711-453429, 01762-696302, 01762-696303
ইমেইল : dreamholidayltd@gmail.com
ওয়েবসাইট : dreamholidayparkbd.com
ফেসবুক পেইজ : fb.com/dreamholidaypark