গর্ভাবস্থায় যে ৭টি খাবার খাবেন না

গর্ভাবস্থা একটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা যা একজন মহিলার শরীর এবং জীবনে গভীর পরিবর্তন নিয়ে আসে। এই সংকটময় সময়ে, আপনি যা খাচ্ছেন তা আপনার এবং আপনার ক্রমবর্ধমান শিশু উভয়ের বিকাশ এবং সুস্থতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

“একটি স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা শুরু হয় মননশীল পছন্দের মাধ্যমে, এবং এতে আমরা যে খাবারগুলি গ্রহণ করি সেগুলি সঠিক ভাবে নির্বাচন করা অন্তর্ভুক্ত৷ আপনার শিশুর নিরাপত্তা অনেক ক্ষেত্রে এটির উপর নির্ভর করতে পারে৷” — আয়শা সিদ্দিকা, বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল।

আপনার খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া অপরিহার্য, কারণ কিছু খাবার আপনার গর্ভাবস্থার জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। আজকে আমরা আপনার এবং আপনার অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত এমন সাতটি খাবার সম্পর্কে আলোচনা করবো করব। এই খাদ্যতালিকার বিবেচ্য বিষয়গুলির প্রতি সতর্ক হওয়ার মাধ্যমে, আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনার গর্ভাবস্থার যাত্রা শুরু করতে পারেন।

৭ টি খাবার গর্ভাবস্থায় খাবেন না

১. অপাস্তরিত দুধ

কাঁচা বা অপাস্তরিত দুধ লিস্টেরিয়ার (Listeria) মতো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় বিপজ্জনক হতে পারে। খাদ্যজনিত অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে পাস্তুরিত দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য বেছে নিন।

২. কাঁচা ডিম

কাঁচা বা কম সিদ্ধ ডিমে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া (Salmonella Bacteria) থাকতে পারে, যা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। ঘরে তৈরি সিজার সালাদ ড্রেসিং বা কাঁচা ডিম দিয়ে তৈরি মেয়োনিজের মতো খাবার এড়িয়ে চলুন। পুরোপুরি সিদ্ধ করা বা রান্না করা ডিম গর্ভাবস্থায় হতে পারে একটি পুষ্টিকর খাবার।

৩. অর্ধসিদ্ধ মাংস

গরুর মাংস, খাসীর মাংস এবং হাঁস-মুরগি সহ কম রান্না করা বা কাঁচা মাংস খাওয়া আপনাকে টক্সোপ্লাজমা (Toxoplasma) এবং ই. কোলাই (E. coli) -এর মতো খাদ্যজনিত রোগজীবাণুর ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। নিশ্চিত করুন যে কোনও সম্ভাব্য ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলার জন্য সমস্ত মাংস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রান্না করা হয়েছে।

৪. সামুদ্রিক মাছ

যদিও মাছ পুষ্টির একটি ভাল উৎস, কিছু ধরণের সামুদ্রিক মাছ, যেমন সুরমা মাছ টুনা মাছ, হাঙ্গর মাছ, এবং সোর্ডফিশের মধ্যে উচ্চ মাত্রার পারদ থাকতে পারে, যা একটি বিকাশমান ভ্রূণের (১ থেকে ৮ সপ্তাহ) জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

৫. কলিজা বা কলিজার তৈরি খাবার

কলিজায় ভিটামিন এ বেশি থাকে, যা গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত হতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণের ফলে জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কলিজা এবং কলিজার তৈরী খাবার এড়ানো ভাল।

৬. কাঁচা পেঁপে

কাঁচা পেঁপেতে প্যাপাইন (Papain Enzyme) নামক এনজাইম থাকে, যা জরায়ু সংকোচন ঘটাতে পারে এবং গর্ভপাত বা অকাল প্রসবের কারণ হতে পারে। পরিমিত পরিমাণে সম্পূর্ণ পাকা পেঁপে খাওয়া নিরাপদ।

৭. আনারস

আনারসে আছে ব্রোমেলাইন (Bromelain), একটি এনজাইম যা প্রচুর পরিমাণে জরায়ুকে নরম করতে পারে এবং সংকোচনের কারণ হতে পারে। অল্প পরিমাণে তাজা আনারস খাওয়াকে সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হলেও, এটি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্যতালিকা সুপারিশের জন্য সর্বদা আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা একজন নিবন্ধিত বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন। আপনার এবং আপনার শিশু উভয়ের স্বাস্থ্য এবং বিকাশকে বজায় রাখার জন্য একটি সুষম এবং পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা গুরুত্বপূর্ণ।

2 Replies to “গর্ভাবস্থায় যে ৭টি খাবার খাবেন না”

  1. খুবই সুন্দর করে বিষয় গুলো বর্ণনা করেছেন এই পোস্ট এর মাধ্যমে। এই পোস্ট পড়ার পর অনেক বিসয় জানতে পেরেছি খুবি উপকারি পোস্ট ।সহজ ও সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করেছান। আমার অনেক ভাল লেগেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *