ঢাকা সিটির আরো একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা এই আহসান মঞ্জিল, এটি আহসান মঞ্জিল জদুঘর নামো পরিচিত। এটিও বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে সদরঘাটের পাশে ইসলামপুরে অবস্থিত। এটি দেশের পুরোনো নান্দনিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। নবাব পরিবারের অসংখ্য সৃতি জরিয়ে আছে এই আহসান মঞ্জিল এ।
আহসান মঞ্জিল সম্পর্কে তথ্য
অষ্টাদশ শতাব্দীতে জামালপুর পরগনার জমিদার শেখ ইনায়েতউল্লাহ বর্তমানে যেখানে আহসান মঞ্জিল সেখানে রংমহল নামে একটি রংমহল তৈরি করেন। পরে উনার ছেলে শেখ মতিউল্লাহ রংমহলটি ফরাসি বণিকদের নিকট বিক্রয় করে দেন। বাণিজ্য কুঠি হিসাবে এটি দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৮৩০ সালে বেগমবাজারে বসবাসকারী খাজা আলীমুল্লাহ বাণিজ্য কুঠিরটি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন।
পরবর্তিতে ১৮৫৯ সালে খাজা আলীমুল্লাহর পুত্র খাজা আবদুল গনি মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানী নামক একটি ইউরোপীয় নির্মাণ ও প্রকৌশল-প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে আহসান মঞ্জিল এর মাস্টারপ্ল্যান করান। এটি নির্মানে সময় লাগে ১৮৫৯-১৮৭২ সাল পর্যন্ত। নওয়াব আবদুল গনি তার প্রিয় পুত্র খাজা আহসানুল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন ‘আহসান মঞ্জিল’।
১৮৮৮ সালের ৭ এপ্রিল ভূমিকম্পে আহসান মঞ্জিলের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে মেরামতের সময় বর্তমান উঁচু গম্বুজটি স্থাপন করা হয়। তখনকার সময়ে ঢাকা শহরে আহসান মঞ্জিলের মতো ভবন আর ছিল না। এর প্রাসাদোপরি গম্বুজটি বহুদূর থেকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করত।
১৯৫২ সালে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ আইনের আওতায় ঢাকা নওয়াব এস্টেট সরকার অধিগ্রহণ করে নেয়। তবে নওয়াবদের আবাসিক ভবন এবং বাগানবাড়িসমূহ অধিগ্রহণের আওতামুক্ত ছিল। কালক্রমে নওয়াব পরিবারের অর্থাভাব ও প্রভাব প্রতিপত্তি হারিয়ে যাওয়ার ফলে আহসান মঞ্জিলের রক্ষণাবেক্ষণ দুরূহ হয়ে পড়ে। নওয়াব পরিবারের সদস্যরা ১৯৬০’র দশকে এখানে থাকা মূল্যবান দ্রব্যাদি নিলামে কিনে নেয়।
এটি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর এর আওতায় একটি যাদুঘর হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
আহসান মঞ্জিল পরিদর্শনের সময়
শনিবার থেকে বুধবার সকাল ১০.৩০ থেকে বিকাল ৪.৩০ পর্যন্ত। শুক্রুবার দুপুর ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।
https://www.ahsanmanzilticket.gov.bd/ লিংক এ গিয়ে অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন।
আহসান মঞ্জিল যাওয়ার উপায়
ঢাকার যেকোন জায়গা থেকে সদরঘাটগামী বাসে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে নেমে হেটে বা রিক্সায় আহসান মঞ্জিল যাওয়া যায়। যাত্রাবাড়ী থেকে রেঞ্জার গারিতে করে সদরঘাট নেমে হেটে বা রিক্সায় যেতে পারবেন। গুলিস্তান লেগুনা, রিক্সা বা সিএনজিতে যাওয়া যায়।
তাছাড়া ভিন্ন ফিল নিতে চাইলে গুলিস্তান গোলাপ শাহের মাজারের সামনে থেকে ঘোরার গারিতে সদরঘাট আসতে পারেন।