যারা ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে যানতে চান এবং প্রাচীন স্থাপনা দেখতে পছন্দ করেন টাঙ্গাইলের মহেরা জমিদার বাড়ি তাদের জন্য অনন্য একটি স্থান। আমাদের দেখা প্রচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভাল অবস্থায় আছে এটি। এছাড়াও এখানে ছোট বড় আরো ৪ টি জমিদার বাড়ি রয়েছে। তাছাড়া টাঙ্গাইল জেলা প্রাকৃতিকভাবেই সুন্দর হওয়ায় ভ্রমনপিপাসুদের কাছে এটি পছন্দের একটি জায়গা। আর টাঙ্গাইলের বিখ্যাত চমচম এর সুনামতো দেশজুরে সমাদৃত। ঢাকার কাছে হওয়ায় একদিনে ঘুরে আসার জন্য টাঙ্গাইল উপযুক্ত জায়গা। জমিদার বাড়ির প্রবেশদারের আগে রয়ছে বিশাখা সাগর নামে বিশাল একটি দীঘি। বাড়ির পিছনে আছে আর দুটি পুকুর একটির নাম পসরা অপরটির নাম রানি পুকুর।
মহেরা জমিদার বাড়িতে চৌধুরি লজ, মহারাজ লজ, আনন্দ লজ, ও কালিচরন লজ নামে বড় ৪ টি ভবন আছে। এছাড়াও রানি মহল, নায়েব ভবন, কাচারি ভবন নামে আরো কয়েকটি ছোট ভবন আছে।
মহেরা জমিদার বাড়ির উপভোগ্য বিষয়ঃ
মহেরা জমিদার বাড়িতে আপনি দৃস্টিনন্দন ভবনগুলো দেখা ছাড়াও আরো পাচ্ছেন নির্দিস্ট পরিমান টাকার বিনিমিয়ে একা বা ভ্রমণসঙ্গীদের নিয়ে থাকা ও খাওয়ার সুবিধা। এছাড়াও এখানে আরো আছে শিশুপার্ক, সুইমিং বা সাতারের এর ব্যবস্থা, নৌকা বা বোট এ চরার সুযোগ। এখানে পুলিশ প্রশিক্ষনকেন্দ্রের সল্পমূল্যের কেন্টিনে চাইলে কাস্টমাইজ বা আপনাদের পছন্দমত খাবার তৈরি করে দিতে বললে তাও পাবেন। এছাড়া আশেপাশের মনোরম গ্রাম্য পরিবেশতো দেখবেন ই।
মহেরা জমিদার বাড়ি যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে মহেরা জমিদার বাড়ির দুরুত্ব ৭০ কিলোমিটারের উপরে। তাই দিনে দিনে ফিরে আসতে চাইলে সকাল সকাল রওনা দেয়াই ভাল কারণ ঢাকা-টাঙ্গাইল রোডে প্রায় ই জ্যাম থাকে। আর ওখানে গিয়ে রাত্রিযাপনের ইচ্ছে থাকলে দুপুরে বা বিকালেও রওনা দিতে পারেন।
মহাখালী থেকে নিরালা বাসে টাঙ্গাইল এর ডুবাইল পুলিশ সেন্টারে নেমে সি এন জিতে মহেরা জমিদার বাড়ী। সি এন জি ভাড়া লোকাল ১৫ টাকা আর রিজার্ব ৭০ টাকা।
অথবা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে টাঙ্গাইলগামী ধলেশ্বরি, বিনিময় বা ঝটিকা বাসে করে টাঙ্গাইল এর নাটিয়াপাড়া নামতে হবে। ওখান থেকে সি এন জি বা অটো রিক্সায় মহেরা জমিদার বাড়ি বা মহেরা পাড়া পুলিশ প্রশিক্ষন কেন্দ্রে আসতে হবে। জমিদার বাড়িটি এখন পুলিশ প্রশিক্ষন কেন্দ্র।
এছাড়া খিললখেত, উত্তরা, টঙ্গি ঐসব জায়গা থেকেও চাইলে গাড়িতে উঠতে পারেন।
ঢাকা থেকে চাইলে ট্রেনেও যেতে পারেন। ধুমকেতু এক্সপ্রেস কমলাপুর স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল ছয়টায়, বিমানবন্দর থেকে সাড়ে ছয়টায় আর জয়দেবপুর থেকে সকাল ৭ টায়। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাড়ে কমলাপুর থেকে সকাল ৮.১৫ মিনিটে, বিমানবন্দর থেকে ৮.৪৫, আর জয়দেবপুর থেকে ৯.১৫ মিনিটে। সিল্কসিটি কমলাপুর থেকে ছাড়ে দুপুর ২.৪৫ এ, বিমান বন্দর থেকে ৩.১৫, আর জয়দেবপুর থেকে ৩.৫০ মিনিটে। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছাড়ে দুপুর ৪.১৫ এ, বিমান বন্দর থেকে ৪.৪৫, আর জয়দেবপুর থেকে ৫.১৫ মিনিটে। এগুলো ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি ট্রেন যায়। যা আপনারা অনলাইনে টিকেট করার সময় দেখবেন, বা কাউন্টারে গিয়ে জিঞ্জেস করলেই বলবে।
উল্লেখিত ট্রেনের মধ্যে ধুমকেতু ও একতা ছাড়া অন্য ট্রেনে গেলে আপনি টাঙ্গাইলের আগে মির্জাপুর স্টেশনে নেমে যেতে পারেন কারন মির্জাপুর আর টাঙ্গাইল এর মাঝামাঝি পরে মহেরা। মির্জাপুর নেমে সি এন জিতে জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।
এছাড়া নিজস্ব বা রিজার্ব গারিতে যেকোনো জায়গা থেকে যাওয়ার সুযোগতো আছেই।
মহেরা জমিদার বাড়ি যাওয়ার খরচ
বাসে গেলে যদি রাতে না থাকেন খাবার সহ প্রত্যকের খরচ হবে ৮০০-১০০০ টাকা। আর যদি রাতে থাকেন তাহলে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত লাগবে।
যোগাযোগঃ বুকিং বা অন্য কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে – 01921- 62390
টাঙ্গাইল এর আরো কিছু দর্শনীয় স্থান