মসজিদ উল আকসা ও ফিলিস্তিন সম্পর্কে হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর বাণী

ইসলাম ধর্মে মক্কা ও মদিনার পর ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ বা বায়তুল মুকাদ্দাস এর স্থান। তাই ফিলিস্তিন ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রান মুসলিম এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন। ফিলিস্তিনিরা এই মসজিদকে ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রতিরোধের প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করেন। 

অনেক বছর ধরে ইজরায়েলি সেনারা এই আল আকসা মসজিদকে দখলের চেস্টা করে আসছে। এটা নিয়ে ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রায়ই যুদ্ধ লেগে থাকে। কেন ইজরায়েলিরা এটি দখল করতে চাইছে তা জানতে হলে আমাদের তাকাতে হবে ইতিহাসের পাতায়। 

আল আকসা মসজিদ বা বায়তুল মুকাদ্দাস কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। ইসলামের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে এই মসজিদ। এই মসজিদ উল আকসাই ছিল মুসলিমদের প্রথম কিবলা, যার দিকে ফিরে হযরত মুহাম্মদ সাঃ তার সাহাবীদের নিয়ে ১০ বছর নামাজ আদায় করেছেন। কোরআন ও হাদিসে এর বহু ফজিলতের কথা উল্লেখ রয়েছে। নবীজি সাঃ চেয়েছিলেন মক্কাকে কিবলা বানাতে তাই আল্লাহতাআলা মক্কাকে কিবলা বানিয়ে দেন। 

তবে মসজিদুল আকসা প্রথম কিবলা হওয়ায় মুসলিদের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি পৃথিবীর ২য় মসজিদ প্রথমটি হল মক্কার মসজিদুল হারাম। মেরাজের রাতে হযরত মুহাম্মদ সাঃ জিবরাঈল আঃ এর সাথে প্রথমে এই মসজিদুল আকসায় এসেছিলেম। এখানে তিনি নবীদের সঙ্গে নামাজ আদায় করে সাত আসমানে রওনা করেন। এটি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরায়েলের প্রথম আয়াতে আল্লাহপাক বলেন পবিত্র সেই সত্বা জিনি তার বান্দাকে ভ্রমন করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার আশে-পাশ আমি বর্কতময় করেছি যেন আমি তাকে আমার কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। নিশ্চই আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রস্টা। 

হযরত মুসা আঃ চেয়েছিলেন মসজিদুল আকসার পাশে যেন তার কবর হয়। এছাড়াও আরো অনেক নবীদের কবর আছে এখানে। হাদিস থেকে পাওয়াযায় রাসুল সাঃ বলেন কেয়ামতের আগে ছয়টি ঘটনা ঘটবে তার একটি হল বায়তুল মুকাদ্দাসের বিজয় হবে। হযরত উমর রাঃ যুগে বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয় করেন। এখন এখানে মুসলিমরা এখানে নামাজ আদায় করতে পারলেও ইহুদি ইজরায়েলি সেনারা চারিদিকে ঘিরে রাখে আর প্রায়ই মুসল্লিদের উপর হামলা করে। 

পৃথিবীতে মুসলিমদের সোয়াবের উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র ৩ টি যায়গায় সফর করা যায় প্রথমটি মসজিদে হারাম, দ্বিতীয়টি মসজিদে নববী, তৃতীয়টি এই মসজিদুল আকসা। এই মসজিদে নামাজ আদায় করলে এক রাকাতে আল্লাহ পাক পাঁচশ রাকাতের সওয়াব দান করেন। এই মসজিদে নামাজ আদায় কারীদের জন্য নিবিজী সাঃ দোয়া করে গেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাঃ থেকে বর্নিত রাসুল সাঃ বলেন যখন সোলাইমান ইবনু দাউদ বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মান কাজ সম্পন্ন করলেন তখন তিনি আল্লহর কাছে তিনটি বিষয়ে দোয়া করেন। একঃ তার মত শাসন ক্ষমতা ও এমন রাজত্ব পরে কাউকে প্রদান করা হবেনা। দুইঃ একাগ্রচিত্তে এই মসজিদে নামাজ আদায়কারীকে তার পাপমোচন করে সদ্য ভুমিস্ট শিশুর মত নিষ্পাপ করে দেয়ার প্রার্থনা করেছেন। রাসুল সাঃ বলেন আল্লাহ তার তিনটি দোয়ার দুইটি কবুল করেছেন এবং অপরটিও কবুল করবেন বলে আশা করছি। (সুনানে ইবনু মাজাহ হাদিস ১৪৭৯)।

বিশুদ্ধ হাদিস থেকে পাওয়া যায় বায়তুল মুকাদ্দাস ও এর আশপাশের জায়গা হবে পুনরুত্থান এর জায়গা। হাশরের ময়দানের সুচনা এখান থেকেই হবে। 

সুতরাং বুঝাই যায় কেন মুসলিমদের নিকট ফিলিস্তিন ও বায়তুল মুকাদ্দাস এত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইজরায়েলিরা কেন এটিকে দখল করতে চায়। 

One Reply to “মসজিদ উল আকসা ও ফিলিস্তিন সম্পর্কে হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর বাণী”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *