কলা অত্যন্ত পিরিচিত ও পুষ্টিকর একটি ফল। কলা অত্যন্ত সহজলভ্য ও দামী না হওয়া প্রায় প্রত্যেকের ঘরেই কলা খাওয়া হয়।
কলা খাওয়ার পর কলার খোসা নিশ্চয়ই ময়লার আবর্জনার সাথে ফেলে দেই? ফেলে দেয়াই স্বাভাবিক কারন কলার খোসা আমাদের কোন প্রয়োজন পরে না বা প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা আমরা জানি না।
তাহলে প্রয়োজনীয়তা কি? আমাদের অনেকেরই বাসার বেলকনিতে বা বাসার ছাদে গাছের বাগান করি। আর এই কলার খোসাই আমাদের ছাদ বাগানের গাছ গুলোর জন্য বিভিন্ন খাদ্য উপাদান সরবরাহ করতে পারে। যা হবে আপনার গাছের জন্য সম্পূর্ণ অর্গেনিক সার বা জৈব সার।
কলার খোসায় কি কি খাদ্য উপাদান থাকে?
১। পটাশিয়াম ২। ফসফরাস ৩। ক্যালসিয়াম
এই তিনটি খাদ্য উপাদানই গাছের জন্য খুবী দরকারি।
খুব সংক্ষেপে এই তিনটি খাদ্য উপাদানের উপকারিতা দেখে নেয়া যাক।
পটাস উদ্ভিদ কোষে শ্বেতসার দ্রব্য পরিবহনে সহায়তা করে। পটাশ আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজ এর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। আমিষ উৎপাদনে সহায়তা করে ইত্যাদি।
ফসফরাস খুবই উপকারী সার| গাছের শিকড় দ্রুত গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফুল ফল বৃদ্ধি করে ও গাছের পরিপক্কতা আনে।
এটি উৎসেচক বা এনজাইম কে কার্যকর করে যা কোষ প্রাচীরের অন্যতম উপাদান। কোষের বৃদ্ধি ও কোষ বিভাজন এবং কোষের মধ্যে জল সঞ্চালনে সহায়তা করে।
কলার খোসার সার তৈরির নিয়ম
বেশ কয়েকটি পদ্ধতির মাদ্ধনে কলার খোসা দিয়ে সার তৈরি করা যায়।
১। প্রথমে কলার খোসা গুলকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিব, তারপর খোসার টুকরো গুলকে একটি ঢাকনা যুক্ত কন্টেইনার বা বালতির মধ্যে পানি দিয়ে তিন দিন ভিজিয়ে রাখবো। তাতে খোসার খাদ্য উপাদান গুলো পানিতে দ্রবীভূত হবে। তিন দিন পর ভিজিয়ে রাখা কলার খোসার পানিটি ঘোলাটে খইরি কালার দেখা যাবে।
কলার খোসার সার এর ব্যবহার
খোসা ভিজিয়ে তৈরি করা পানির দ্রবণ গুলি ছেঁকে নিয়ে সরাসরি গাছের বা টবের গাছের মাটিতে ব্যাবহার করতে পারেন সপ্তাহে ১ বার । তাছাড়া দ্রবণটি বোতলে ভরে গাছে স্প্রে করা যায়। সেক্ষেত্রে দ্রবণটি যদি বেশি ঘন হয় তাহলে হালকা পানি মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।
২টি ভালো সাইজের কলার খোসা + ১ লিটার পানি থেকে তৈরিকৃত তরল সার আমরা ১২ ইঞ্চির ৩ থেকে ৪ টা টবে ব্যাবহার করতে পারবো।
মজার বিষয় হচ্ছে দ্রবীভূত পানিটি ছেঁকে নেয়ার পর কলার খোসার প্রায় গলিত অংশ থাকবে সেগুলোকে আবার সরাসরি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুনঃ ডিমের খোসার সার তৈরির পদ্ধতি ও ব্যবহার
Coco Peat কোকো পিট কি? উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়মাবলী
নিমের কীটনাশক তৈরি ও ব্যবহার