নিম একটি ঔষধি গুনাগুণ সমৃধ খুবী পরিচিত গাছ। নিম এর কীটনাশক গাছের পোকা মাকড় দমনে অত্যন্ত কার্যকরি, এটি দিয়ে প্রায় সব ধরণের কিট পতঙ্গ দূর করা যায়। যেমন – বিছা পোকা, বিটল, সাদা মাছি , জবপোকা ইত্যাদি। নিম পাতার কীটনাশক সম্পূর্ণ কেমিক্যাল ও বিষ মুক্ত, প্রাকৃতিক তাই গাছের কোন ক্ষতি করে না। তাই এর মাধ্যমে কেমিক্যাল ও বিষমুক্ত ফসল, ফল ও সবজি উৎপাদন করা যায়। এই পোস্ট এ আমরা আলোচনা করবো নিমের কীটনাশক কিভাবে তৈরি করা যায়, কিভাবে ব্যাবহার করবো এবং কি কি পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করতে নিমের কীটনাশক কাজে লাগে তা নিয়ে।
কিভাবে নিমের কীটনাশক তৈরি করা যায়?
প্রথমে গাছ থেকে নিম পাতা সংগ্রহ করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এরপর একটি পাত্রে প্রয়োজন মত পানি নিয়ে নিম পাতা গুলোকে ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে পাত্রটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ততক্ষণ সেদ্ধ করতে হবে যতক্ষণ না পানির রং সবুজ হলুদ বর্ণের না হয়। দেখলেই বঝা যাবে পানিটা ভালভাবে সেদ্ধ হয়েছে কিনা। সেদ্ধ হয়ে গেলে পাত্রটি নামিয়ে ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পুরোপুরি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত হবে।
তারপর পাত্র থেকে পাতা গুলোকে উঠিয়ে নিয়েনিব এবং পানিটাকে একটি ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিব। যদি তৈরিকৃত দ্রবণটি ১ লিটার পরিমানে তৈরি করে থাকেন তাহলে তার সাথে কোন আলাদা পানি মিশাবেন না। ঐ ১ লিটার পানিতে যেকোনো লিকুইড সোপ বা সেম্পো ৬ থেকে ৮ ফোঁটা মিশিয়ে দিবো। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল হাতে তৈরি অর্গানিক নিমের কীটনাশক।
নিমের বীজ থেকে কীটনাশক তৈরি করতে চাইলে প্রথমে বীজ গুরো করে নিতে হবে। বাকি সব নিয়ম কানুন ও পরিমান একই থাকবে।
নিম থেকে তৈরিকৃত কীটনাশক বেশ অনেকদিন সংগ্রহ করে রাখা যায়।
এবার আশা যাক কি কি দমনে এই কীটনাশক ব্যাবহার করা যাবে?
নিম কীটনাশক ব্যাবহার করে কেটারপিলার, মিলিবাগ, বিটল , সাদা মাছি , বিছা পোকা , জবপোকা ইত্যাদি দমন করা সম্ভব। এছারাও ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জনিত রোগের আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করা যায়।
কিভাবে নিম কীটনাশক প্রয়োগ করবেন?
নিম থেকে তৈরিকৃত কীটনাশক একটি স্প্রে বোতলে ভোঁরে গাছে স্প্রে করতে হবে। সকালে বা বিকেলে এই কীটনাশক প্রয়োগ করা ভালো, রোদের তাপ থাকা অবস্থায় স্প্রে করা ঠিক না। ৮ থেকে ১০ দিন অন্তর অন্তর স্প্রে করলে ভালো। অবশ্যই যখন স্প্রে করবো সকল গাছে একসাথে স্প্রে করা উচিৎ।
আরেকটি কথা পাতা থেকে রস বের করে বাকি পাতা গুলোকে আমরা ফেলে না দিয়ে আমাদের যদি কম্পোস্ট তৈরির স্থান থেকে তাহলে সেখানে ব্যাবহার করতে পারি।
আরো পড়ুনঃ
ছাদ বাগান করার সহজ পদ্ধতি
ছাদে বাগান করার উপকারিতা
ছাদে বাগান করার কৃষি উপকরণ