হাজীগঞ্জ দুর্গ নারায়ণগঞ্জ

হাজীগঞ্জ দুর্গ শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পারে নারায়ণগঞ্জ এর হাজি গঞ্জ এ অবস্থিত। এটি মুঘল আমলে নির্মিত একটি প্রাচীন জল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সপ্তাদশ শতাব্দির দিকে শত্রুদের হাত থেকে ঢাকাকে রক্ষা করার জন্য যে তিনটি জল দুর্গ নিয়ে ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট গড়ে তোলা হয়েছিল হাজীগঞ্জ দুর্গ তার মধ্যে একটি। অপর দুটি হচ্ছে সোনাকান্দা দূর্গ ইদ্রাকপুর দূর্গ। 

ধারনা করাহয় নদীপথে মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে মুঘল সুবেদার ইসলাম খান দুর্গটি নির্মান করেন। কেউ কেউ মত দিয়েছেন এটির নির্মাতা মির জুমলা। তখনকার সময়ে বুরিগঙ্গা নদী ও লক্ষ্যা নদী এখানে মিলিত হত, তাই স্থানটি তখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। 

ষড়র্ভুজ বা ছয় কোনা বিশিষ্ট এই দূর্গের দৈর্ঘ ২৫০ মিটার ও প্রস্থ ২০০ মিটার। এর প্রাচীরগুলো ২০ ফিট উচু ও ১০ ফিট পুরু। যুদ্ধের সময় বন্দুক চালানোর জন্য যাতে অসংখ্য ছিদ্র।  হাজিগঞ্জ দূর্গের ছয়টি কোনায় কামান বসানোর জন্য রয়েছে ছয়টি বুরুজ। দূর্গে প্রবেশের জন্য আছে সিড়িযুক্ত প্রবেশদার। দূর্গের ভিতরে একপাশে একটি ওয়াচ টাওয়ার ও আছে। 

১৮৯৬ সালে প্রকাশিত ‘লিস্ট অব অ্যানসিয়েন্ট মনুমেন্টস ইন বেঙ্গল’ বইয়ের লেখা অনুসারে সেই সময় এটি প্রায় ধ্বংস অবস্থায় ছিল। সেই সময় বেষ্টনী প্রাচীর এবং একটি বুরুজ থাকার কথা বইতে উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। একটি মহল দুর্গটি দখলের চেষ্টা করেছে। অপর একটি অংশ চানপুকুর দখল করে সেখানে প্রভাবশালীরা মিল-কারখানা গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন এ দুর্গের চারপাশের দখলদারদের উচ্ছেদ করে দুর্গটি সংস্কারের মাধ্যমে প্রায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে। ১৯৫০ সালে দুর্গটিকে প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে এটিকে সংস্কার করে বর্তমান অবস্থা নিয়ে আসা হয়।

এটির কাছেই রয়েছে আরো দুইটি প্রাচীন নিদর্শন বিবি মরিয়মের সমাধী ও মসজিদ দেখে আসতে পারেন। নির্মল সময় কাটানোর জন্য পাশেই আছে নদী চাইলে নৌকায় ঘুরতে পারবেন। তাছাড়া চাইলে নোদী পার হয়ে সোনাকান্দা দূর্গও দেখে আসতে পারেন।

হাজিগঞ্জ দূর্গে কিভাবে যাবেন

ঢাকার থেকে যেতে চাইলে গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড এসব জায়গা থেকে অনেক বাস নারায়ণগঞ্জ যায়। যেকোনটিতে করে নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়া নেমে রিক্সা বা সিএনজিতে হাজিগঞ্জ দূর্গে যেতে পারবেন। ওখান থেকে হাটার দূরুত্বেই বিবি মরিয়মের সমাধী ও মসজিদ। 

চিটাগাং রোড থেকে লোকাল লেগুনা, অটো বা সি এনজিতেও হাজিগঞ্জ দূর্গে যেতে পারেন। 

এছাড়াও নিজস্ব গারি বা রিজার্ব সিএনজি বা কারে আশেপাশের যেকোন জায়গা থেকে যেতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

নারায়ণগঞ্জ এ ভাল অনেক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে যেখানে বাংলা ও চাইনিজ খাবার পাওয়া যায়। আপনাদের পছন্দমত যেকোনটিতে খেতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ ঢকা সিটিতে ৫ টি বেরানোর জায়গা
মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *