সপ্তদশ শতকে নদীপথে মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে মুঘল আমলে যে তিনটি জল দূর্গ নির্মান করাহয় সোনাকান্দা দুর্গ তার মধ্যে একটি। বাকি দুটি হল হাজীগঞ্জ দুর্গ ও ইদ্রাকপুর দূর্গ। ধারনা করাহয় মির জুমলাকে বাংলা প্রদেশের সুবেদার নিজুক্ত করার পর ১৬৬০ সালের দিকে তিনি দূর্গটি নির্মান করেন। এটি নারায়ণগঞ্জে জেলার বন্দর উপজেলায় শীতলক্ষা নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত।
চতুর্ভুজ আকৃতির এই দূর্গটির দৈর্ঘ ৮৬ মিটার ও প্রস্থ ৫৭ মিটার। এটির চার কোনায় চারটি বুরুজ আছে। উত্তর দিকে রয়েছে বিশালআকার আয়তাকার প্রবেশদার। দূর্গের নদীর দিকে রয়েছে বিশালকার উচু গোল কামান বসানোর জায়গা। দূর্গের প্রাচিরগুলো প্রায় ১০ ফিট চওড়া ও ভিতর থেকে বন্দুক ও গোলা বারুদ ব্যবহারের ছিদ্র সম্বলিত।
বার ভূইয়াদের অধিপতি ঈসাখাঁ বিক্রমপুরের জমিদার কেদার রায় এর বিধবা কন্যা সোনাবিবিকে জোড় পূর্বক বিয়ে করে এই দূর্গে নিয়ে এসেছিলেন। তা মেনে নিতে না পেরে সোনা বিবি রাত দিন দূর্গে কান্না করতেন। সেই থেকে ধীরে ধীরে এই জায়গার নাম হয়েযায় সোনাকান্দা।
কেউ কেউ বলেন বিক্রমপুরের জমিদার কেদার রায়ের কন্যা স্বর্ণময়ী শীতলক্ষ্যা নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলদস্যু দ্বারা অপহৃত হন। সোনারগাঁর শাসক ঈশা খাঁ তাকে উদ্ধার করে দুর্গে নিয়ে আসেন ও তার পিতাকে তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু কেদার রায় তাকে মুসলমানের ঘরে রাত কাটানোর দায়ে ফিরিয়ে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাই মর্মাহত রাজকুমারী স্বর্ণময়ী দুর্গে বসে কেঁদেছিলেন বলে এই দুর্গের নাম হয় সোনাকান্দা।
সোনাকান্দা দূর্গ কিভাবে যাবেন?
ঢাকার গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড এসব জায়গা থেকে অনেক বাস নারায়ণগঞ্জ যায়। যেকোনটিতে করে নারায়ণগঞ্জ এসে ২ নাম্বার ঘাট থেকে নৌকায় নদী পার হয়ে রিক্সায় সোনাকান্দা কেল্লায় যাওয়াযায়।
আবদুল্লাহপুর, উত্তরা, রামপুরা এসব জায়গা থেকে আসমানি বাসে করে মদনপুর এসে রাস্তা পার হয়ে অটোরিক্সা বা সি এনজিতে সোনাকান্দা দূর্গে যেতে পারবেন।
চাইলে কমলাপুর থেকে ট্রেনেও নারায়ণগঞ্জ গিয়ে যেতে পারেন।
এছাড়াও নিজস্ব গারি বা রিজার্ব সিএনজি বা কারে আশেপাশের যেকোন জায়গা থেকে যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন?
সোনাকান্দা দূর্গের আশেপাশে বেশকিছু খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে খাওয়ার জন্য। এরচেয়ে ভাল খেতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদরে এসে খেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
এটি ঢাকার কাছে হওয়ায় দিনে গিয়ে আসাযায় তারপরো কেউ থাকতে চাইলে বা দূর থেকে আসলে নারায়ণগঞ্জ সদরে কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে থাকার মত।
নারায়ণগঞ্জ এ অনেকগুলো প্রাচীন ঐতিহাসিক ও দর্শনিয় স্থান রয়েছে সময় থাকলে সেগুলোও দেখে যেতে পারেন। তারমধ্যে সবচেয়ে কাছে হাজীগঞ্জ দূর্গ, এছাড়া বিবি মরিয়মের সমাধী ও মসজিদ, পানাম সিটি, মুরাপাড়া জমিদার বাড়ি, লোকশিল্প জাদুঘর অন্যতম।
আরো পড়ুনঃ ঢকা সিটিতে ৫ টি বেরানোর জায়গা
মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ