ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মা হলে করণীয়

যক্ষ্মা ব্যকটিরিয়া জনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। সারা বিশ্বে মোট ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতি ১০০ জনে ১০ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। ডায়াবেয়াটিস রোগীদের যক্ষা বেশি হওয়ার কারণ ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যক্ষা রোগীর কফ, হাঁচি ও কশির মাধ্যমে এ জীবানু ছড়ায়। এবং নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস আর মাধ্যমে সুস্থ বেক্তির ফুসফুসে ব্যকটেরিয়া ঢুকে যক্ষা রোগ সৃষ্টি করে।

যেসব মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের যক্ষ্মা রোগ বেশি হয়ে থাকে। আর যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। 

ডায়াবেটিস রোগীদের যক্ষ্মার লক্ষণ ও রোগ নির্নয়

ডায়াবেটিস রোগীদের ফুসফুসের রোগের প্রধান কারণ হ’ল দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা, যার ফলস্বরূপ শরীর সহজেই যক্ষ্মা আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির যক্ষ্মা হলে অনেক ক্ষেত্রে যক্ষ্মা নির্ণয় করতে সময় লেগে যায়। কারণ বেশির ভাগ সময় ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মা হলে তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না। ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মার লক্ষণ সাধারণ যক্ষ্মা রোগীর লক্ষণের মত নাও হতে পারে।

এক নাগাড়ে ২ সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে, সাথে জ্বর থাকতে পারে কোন কোন ক্ষেত্রে জ্বর নাও থাকতে পারে। বেশির ভাগ এন্টিবায়োটিক প্রয়োগের পরো সুস্থ না হলে। এমন অবস্থা হলে অবশ্যই সকল ধরনের যক্ষ্মা নির্নয়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যক্ষ্মা নির্নয় করা উচিত।

ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মার চিকিৎসা

সঠিক সময়ে যক্ষ্মা নির্নয় করা না গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে যক্ষ্মা হতে পারে। তাই যক্ষ্মার লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত।

যক্ষ্মা একটি মারাত্বক রোগ হলেও সঠিক সময়ে যক্ষ্মা নির্নয় করা গেলে ও চিকিৎসা নিলে যক্ষ্মা ভাল হয়ে যায়। তবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসে যক্ষা হলে বারতি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। 

ডায়াবেটিস রোগীর যক্ষ্মা নিরাময়ের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা অতি জরুরি। কারণ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে যক্ষ্মার ঔষুধ কাজ করে না। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশী হলে যক্ষ্মা শরীরের অন্যান্য যায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে ডায়াবেটিস রোগীকে ইনসুলিন নেয়ার পরামর্শ দেয়া হতে পারে। 

শেষ কথা

এমনিতেই ডায়াবেটিস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষত সৃষ্টি করে, যক্ষ্মা ও অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন যায়গায় হয়। তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির যক্ষ্মা হলে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন যক্ষ্মার পরিমাণ বেড়ে না যায়। 

বর্তমান সময়ে শারীরিক পরিশ্রম বা হাঁটা চলা কম করা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, ও বংশীয় বা জীনগত কারণে দিন দিন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। অন্যদিকে ভিবিন্ন পর্যায় থেকে যক্ষ্মা নির্মুলের চেষ্টা করলেও পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছেনা। বিশ্বে এখনো প্রতিবছর প্রায় ৭০ হাজার লোক যক্ষ্মায় মারা জান। 

তাই এসবের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *