কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়?

মার্কেটপ্লেস মানে কি? মার্কেটপ্লেস মানে বাজার। বাজারে কি হয়? কেনাবেচা হয়। আমরা কোন কিছু কিনতে গেলে যেই বাজারে যাই মার্কেটপ্লেসও তেমনই বাজার। তবে এ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রি হয় না। এখানে বিক্রি হয় মেধা এবং শ্রম। উন্নত দেশগুলো থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান তাঁদের খরচ কমানোর জন্য ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে তাঁদের কাজ করিয়ে নিতে চান। আর ফ্রিল্যান্সারদেরকে খুঁজে পাওয়ার জন্য তাঁরা যে জায়গাটিতে আসেন সেটিই হচ্ছে মার্কেটপ্লেস। ইন্টারনেটে কাজ করিয়ে নেওয়া এবং কাজ পাওয়ার স্থান হল মার্কেটপ্লেস। কাজটি যেহেতু ইন্টারনেটের মাধ্যমেই হয়, তাই এই বাজারের দৃশ্যত কোন অস্তিত্ব নেই। এই বাজার বলতে আসলে একটি ওয়েবসাইটকে বোঝায়।

কোথায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করা যায়?

এই যে মার্কেটপ্লেস নিয়ে বেশ কথাবার্তা বলা হয়েছে, এই মার্কেটপ্লেসে গিয়েই আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করতে হবে। সেখানে গেলেই আপনি অনেক প্রতিষ্ঠান এবং হায়ারিং ম্যানেজারদের দেখা পাবেন, যাঁরা আপনাকে কাজ দেয়ার জন্যই সেখানে বসে রয়েছেন! তবে এসব প্রতিষ্ঠান কিংবা হায়ারিং ম্যানেজাররা আপনাকে তখনই কাজ দিবে যখন আপনার কোন বিষয়ে খুব ভালো দক্ষতা থাকবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে খুব দ্রুত সফলতার জন্য যে জিনিসটি দরকার, সেটি হচ্ছে ধৈর্য। মার্কেটপ্লেসে যাওয়ার পরপরই আপনি কোনও কাজ পেয়ে যাবেন এমনটি নয়। চাকুরি পাওয়ার জন্য যেমন বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে অনেকগুলো ইন্টারভিউ দিয়ে একটিতে যোগ দেয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এখানকার বিষয়টাও তেমন, কয়েকটি ইন্টারভিউ দেয়ার পরই আপনি এখানে কাজ পাবেন। যে বিষয়ক কাজ আপনি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে শুরু করতে চান, সে বিষয়ক জ্ঞান থাকার পাশাপাশি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। চলুন, কিছু মার্কেটপ্লেসকে আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেই।

আপওয়ার্ক

আগের ২ টি মার্কেটপ্লেস ওডেস্ক ও ইল্যন্স দুটি একত্রে এখন আপওয়ার্ক ডট কম (upwork.com) বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইট। এখানে ঘন্টাপ্রতি এবং ফিক্সড প্রাইস এ দুধরণের কাজ পাওয়া যায়। কাজের পেমেন্ট নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ঘন্টাপ্রতি কাজ করলে। আর ফিক্সড প্রাইসে অর্থপ্রাপ্তি নির্ভর করে আপনার নিয়োগকর্তার উপর। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সবাই আপওয়ার্ক এ ঘন্টাপ্রতি কাজ রেকমেন্ড করেন।

ফাইভার

অনলাইনে নানান কাজ করে অর্থ উপার্জন করার একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হলো ফাইভার। লোগো ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, আর্টিকেল লেখা, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, এস.ই.ও, এন্ড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন, গ্রাফিকস ডিজাইন ইত্যাদি কাজ এখানে করতে পারবেন।

এখানে যেকোনো কাজ করানোর জন্য সর্বনিম্ন ৫ ডলার পেমেন্ট করতে হবে। ফ্রিল্যান্সার কাজ সম্পন্ন করে জমা দেওয়ার পরে ফাইভার থেকে পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। এর জন্য ফাইভার প্রতি ৫ ডলারে ১ ডলার নিয়ে থাকে।

প্রতিদিন হাজার হাজার বায়ার ফাইভারে তাদের কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। আপনার যদি ভালো কিছু দক্ষতা থাকে এবং একাউন্টে ভালো রেটিং ও রিভিউ জমাতে পারেন তাহলে ফাইবারেই ক্যারিয়ার গড়া যুক্তিসঙ্গত।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসেবে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত নাম ফাইভার। ধরুন, আপনি একদম নতুন। আপনি কিছু ছােটো ছোটো কাজ পারেন। হতে পারে শুধু আপনি ডাটা এন্ট্রি জানেন। ফাইভারে আপনার জন্যেও কাজ আছে।

ফ্রিল্যান্সার

অনলাইনের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com)। প্রতিষ্ঠানটি একদম শুরু থেকেই নানারকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে, আর এ প্রতিযোগিতার কারণেই হয়ত প্রতিষ্ঠানটির নাম শুনে থাকবেন। বেশকিছু বছর আগে এসইও অ্যান্ড রাইটিং প্রতিযোগিতায় ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশি ডেভসটিম লিমিটেড। এই সাইটটিতে সব কাজই ফিক্সড প্রাইস নির্ভর। ঘন্টাপ্রতি কাজের কোন সিস্টেম এখনো চালু হয়নি। এদের বিভিন্ন মেম্বারশিপ সিস্টেম আছে।

গুরু

আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপরের তিনটা কোম্পানি’ই বেশি জনপ্রিয়। এদিক থেকে গুরু ডট কম খুব একটা জনপ্রিয় নয়। যেহেতু এখানে লোকজনও কম, সুতরাং নতুনরা চাইলে এখানে একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। নতুন করে এটাতে ঘন্টাপ্রতি কাজের সিস্টেম চালু করা হয়েছে যেখানে পেমেন্ট নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

এছাড়াও আরো আছে, জুমলা ল্যান্সার এবং ফ্রিল্যান্সার সুইচ সহ আরো অনেক মার্কেটপ্লেস যেখানে ভাল মানের কাজ পাওয়া যায়।

মার্কেটপ্লেস এ অ্যাকাউন্ট তৈরি

মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে তো জানলেন। এবার এর মধ্য থেকে যেকোন একটি মার্কেটপ্লেস পছন্দ করতে হবে যেখানে কাজ শুরু করতে চান। এরপর উক্ত সাইটের নিয়মানুযায়ী অ্যাকাউন্ট তৈরি করে ফেলুন। অ্যাকাউন্ট তৈরির পর অবশ্যই প্রোফাইলটিকে অনেক সুন্দর করে সাজাতে হবে। আগের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে সেগুলোকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতি মূহুর্তে নতুন নতুন কাজ আসছে। আপনার পারদর্শিতা আনুযায়ী প্রতিটা কাজ দেখতে থাকুন। প্রথম কয়েক দিন বিড করার কোন প্রয়োজন নেই। এই কয়েকদিন ওয়েবসাইটি ভাল করে দেখে নিন। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পড়তে পারেন। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রথমদিকে কাজ পাওয়া কিন্তু সহজ নয়। তাই আপনাকে ধৈর্যসহকারে বিড করে যেতে হবে। প্রথম কাজ পেতে হয়ত ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কয়েকটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। তখন ক্লায়েন্টরাই আপনাকে খুঁজে বের করবে।

ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন জরুরী

আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং সেক্টরের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ইংরেজি না জানা। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের তরুণেরা আউটসোর্সিংয়ে পিছিয়ে থাকার পেছনে ইংরেজি দুর্বলতা অনেকটা দায়ী। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হয় সে জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। নতুবা কোনভাবেই আপনি বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট যেমন বুঝতে পারবেন না তেমনি কোন সমস্যাও তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন না। ইংরেজিতে দূর্বলরা উপরের কথা পড়ে হয়ত ঘাবড়ে যেতে পারেন, তবে তাদের জন্য বলতে পারি, আপনাকে কিন্তু ইংরেজিতে পন্ডিত হতে হবে এমন নয়। ভাব বিনিময় এবং ব্যবসায়িক কাজগুলোর জন্য সাধারণত যে ইংরেজি ব্যবহৃত হয় সেটি জানলেই চলবে। যারা ইংরেজিতে দূর্বল তাদের এটি দূর করতে খুব বেশি যে সময় লাগবে এমনটি নয়, ২ থেকে ৩ মাস একটু চেষ্টা করলেই এ ধরণের ইংরেজি রপ্ত করা সম্ভব।

দক্ষতা অনুযায়ী কাজ বেছে নেওয়া

মার্কেটপ্লেস তো চিনলেন, অ্যাকাউন্টও খুলে ফেললেন নিজের পছন্দের সাইটে। এবার তো কাজ শুরু করতে হবে। এজন্য আপনাকে খুঁজে নিতে হবে কাজ, আর সেটি অবশ্যই আপনার দক্ষতার ভিত্তিতে। যে বিষয়ে আপনার দক্ষতা নেই সে বিষয়ে কোনভাবেই অ্যাপ্লাই করতে যাবেন না। তাহলে কাজ তো পাবেনই না, বরং আপনার রেপুটেশনও নষ্ট হতে পারে বায়ারদের কাছে। মার্কেটপ্লেসে নিবন্ধনের পরপরই ভালো একটা কাভার লেটার তৈরি করা উচিত, যা ক্লায়েন্টের কাছে কাজের আবেদনের সময় লাগবে। সাথে আগে সম্পন্ন করা উল্লেখযোগ্য কাজের লিস্ট বা একটি ভালো পোর্টফোলিও তৈরি করতে হবে।

বায়ার কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মূলত এই পোর্টফোলিও বা কাজের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করেন। কোনো মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটি ভালোভাবে তুলে ধরা উচিত। কোনো কাজ গ্রহণের আগে সেটির সময়সীমা, বাজেট ও সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আর ক্লায়েন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পারলে সেই ক্লায়েন্টের পূর্বের কোনো রিভিউ দেখে নেওয়া ভাল। কারণ অনেক সময় ক্লায়েন্ট প্রতারক হলে কাজটি করিয়ে প্রতারণা করতে পারেন।

কাজে অ্যাপ্লাই করার পর বায়ার যদি আপনাকে যোগ্য মনে করে তবে ইন্টারভিউতে ডাকবে, সেখানে আপনি তার প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে নিশ্চিত কাজ পেয়ে গেলেন! এবার বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রজেক্টের বিস্তারিত বুঝে নিন। এরপর সে অনুযায়ী কাজটিও শেষ করে ফেলুন। কাজের মাঝখানে প্রয়োজনে কোন তথ্য দরকার পড়লে বায়ারকে আবার নক করতে পারেন। আর হ্যাঁ, কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডেডলাইনের দিকে নজর রাখা জরুরী। পারলে ডেডলাইনের আগে ভাগেই কাজটি শেষ করে বায়ারের কাছে জমা দেওয়া ভাল। এছাড়া ভাল রেটিং পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা রাখতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। দ্রুত কাজের জন্য অবশ্যই অপেক্ষাকৃত ভালোমানের কম্পিউটার ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট থাকতে হবে।

মার্কেটপ্লেস থেকে কিভাবে টাকা আনবেন

মার্কেটপ্লেসে যোগ দিলেন, কাজ পেলেন এবং সেটি সম্পূর্ণ করে সাবমিটও করলেন। এবার আপনার আয় ঘরে আনবেন কিভাবে? ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো কি কি মেথড সাপোর্ট করে সেটা দেখার আগে আমাদের দেখতে হবে আমাদের দেশে বা আমাদের ব্যাংকগুলো কি কি পেমেন্ট মেথড সাপোর্ট করে। যেমন: আপওয়ার্ক এর কথাই ধরি, এখানে মাস্টার কার্ড, পেপাল, স্ক্রিল বা মানিবুকার এবং ডাইরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। এদের মধ্যে পেপাল বাংলাদেশে এখনো চালু হয়নি। তাই বাকি তিনটির যেকোন একটির মাধ্যমেই অর্থ উত্তোলন করতে হবে।

১. স্ক্রিল বা মানিবুকার

স্ক্রিল শুরু থেকেই নিরাপত্তার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর এবং সব দিক দিয়ে ঝামেলবিহীন অর্থ উত্তোলন মাধ্যম। এ মাধ্যম দিয়ে অর্থ উত্তোলন করার জন্য skrill.com থেকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, নামের জায়গায় সার্টিফিকেট নাম ব্যবহার করবেন। কারণ পরে ভেরিফাই করতে হবে ব্যাংকে টাকা তোলার আগে। কারেন্সি সিলেকশনের জায়গায় ইউএস ডলার ব্যবহার করবেন। অ্যাকাউন্ট তৈরি শেষে স্ক্রিল থেকে ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট পাঠানোর পরে মানিবুকার চিঠি পাঠাবে ঠিকানা ভেরিফাই করার জন্য। চিঠি আসতে ২৫ দিন থেকে একমাস এর মত সময় লাগে। চিঠিতে গোপন কোড লেখা থাকে, সেটি মানিবুকারের নির্দিষ্ট বক্সে ইনপুট করলেই ঠিকানা ভেরিফাইড হয়ে যাবে। এবার ব্যাংক ভেরিফাই করতে হবে। আপওয়ার্ক বা অন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে স্ক্রিল এ পেমেন্ট সেন্ড করার পরে তা স্ক্রিল থেকে ব্যাংক এ পাঠাতে হবে। আপনি স্ক্রিল এর প্রোফাইল অপশন এ গিয়ে ব্যাংক এর সুইফট কোড এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার সঠিকভাবে দিলেই ব্যাংকে জমা হয়ে যাবে।

এবার কাজ হল স্ক্রিল থেকে অল্প কিছু পরিমাণ ডলার (১৫ ডলার এর নিচে) আপনার ব্যাংকে পাঠান। প্রথম লেনদেনে টাকা ব্যাংকে আসতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে। টাকা এলো কি না জানতে নিয়মিত ব্যাংকে খোঁজ রাখুন অথবা ইন্টারনেট এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যালেন্স জানতে পারেন। টাকা চলে আসলে ব্যাংকে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট নিয়ে আসুন। এটা অবশ্যই লাগবে। এর পর স্ক্যান করে মানিবুকারের নিকট পাঠাতে হবে। এটি পাঠানোর জন্য আপনি এই ইমেইল এড্রেস ইউজ করতে পারেন (info@moneybookers.com) কিংবা স্ক্রিল এ লগইন করে কনট্যাক্ট থেকে তাদের মেইল পাঠাতে পারেন। ব্যাংক এর সকল ইনফরমেশন এবং নাম ঠিক থাকলে দুইদিন থেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার স্ক্রিল ভেরিফাইড হয়ে যাবে এবং আপনার উইথড্রয়াল লিমিট বেড়ে যাবে। এরপর থেকে কোন ঝামেলা ছাড়াই ব্যাংকে টাকা তুলতে পারবেন। সময় লাগবে ১ থেকে ২ দিন!

২. মাস্টার কার্ড

পেওনিয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান সব ফ্রিল্যান্সারদেরকে একটি করে মাস্টারকার্ড পাঠায় অর্থ লেনদেন করার জন্য। এ কার্ডটি পাওয়ার জন্য আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলবেন তার পেমেন্ট অপশন থেকে পেওনিয়ারের কাছে মাস্টারকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেমন ওডেস্ক বা ইল্যান্স এর মাধ্যমে আবেদন করতে হলে এখানের ওয়ালেট বা পেমেন্ট অপশন এ গিয়ে মাস্টার কার্ডের জন্য সাইন-আপ করার লিংকে ক্লিক করলেই পেওনিয়ার ডটকম সাইটে নিয়ে যাবে। সেখানে নতুন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি আপনার পূর্ণ নাম ঠিকানা ব্যবহার করবেন। এ সাইটে সাইন আপ করতে পাসপোর্ট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সিরিয়াল নাম্বার দিতে হবে। কোন আবাসিক এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন ইউনিভার্সিটির ঠিকানা দেয়া যাবে না। সাইন-আপ ফরমে ঠিকানা লেখার সময় ৩০ অক্ষরের মধ্যে রাখতে হবে। কার্ড হাতে পাবেন দুটো উপায়ে। এক হচ্ছে সাধারণ, এজন্য পেওনিয়ারকে অগ্রিম ২০ ডলার ফি দিতে হবে। তাহলে তাঁরা কার্ড ইস্যু করবে। সাধারণভাবে কার্ড হাতে পেতে এক মাস সময় লাগবে। দ্বিতীয় সিস্টেম হলো ডিএইচএল কুরিয়ার মেথড। এটার মাধ্যমে আপনি চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই কার্ড পেয়ে যাবেন। এজন্য অবশ্য ফি গুনতে হবে ৬০ ডলার!

কার্ড হাতে পাওয়ার পর সেটি অ্যাক্টিভেট করতে হবে পেওনিয়ার ওয়েবসাইটে লগ-ইন করে। নিরাপত্তার জন্য পিনকোড দিতে হবে চার ডিজিটের। এরপর কার্ডটি ব্যবহার উপযোগি হয়ে যাবে। তবে আপনাকে আগেই জানিয়ে রাখি, পেওনিয়ার কার্ড দিয়ে টাকা তোলা অনেক খরচের ব্যাপার। যেখানে স্ক্রিল থেকে টাকা তুলতে গেলে সবমিলিয়ে সাড়ে তিন ডলার খরচ হবে সেখানে পেওনিয়ারে খরচ প্রায় দ্বিগুণ। পেওনিয়ার এ ২০ ডলারের কম উইথড্রয়াল সাপোর্ট করে না। তাই ওডেস্ক বা ইল্যান্স বা অন্য সাইট থেকে উইথড্র করবেন ২০ ডলার বা তার বেশি। উইথড্র করলেই সাথে সাথে কার্ডে ডলার আসবে না। এটা অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকবে দুদিন। এখানে বলা হবে যে আপনি যদি এখনই টাকা নিতে চান তাহলে আপনাকে আড়াই ডলার খরচ করতে হবে। আর যদি তা খরচ করতে না চান তাহলে দুইদিন অপেক্ষা করতে হবে। এখন আপনি যদি আড়াই ডলার খরচ করতে পারেন তাহলে তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে আপনার কার্ডে ডলার চলে আসবে। আর তা না হলে অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।

কার্ডে টাকা জমা হওয়ার পর এবার নিজ হাতে টাকা আনার পালা। এটি যেহেতু মাস্টার কার্ড, তাই দেশের যেকোন ব্যাংকের মাস্টারকার্ড সাপোর্টেড এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যাবে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক মাস্টার কার্ড সাপোর্ট করে।

৩. সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার

ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে টাকা পাওয়ার জন্য এটি বেশ ঝামেলাবিহীন উপায়। প্রায় সব ফ্রিল্যান্সিং সাইটই সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার সাপোর্ট করে। ওডেস্ক থেকে টাকা আসতে মাত্র চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ব্যাংকিং আওয়ার সময় লাগে। ওয়্যার সিস্টেম যোগ করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের উইথড্রয়াল মেথড থেকে ওয়‍্যার ট্রান্সফার সিলেক্ট করে সেখানে ব্যাংকের পরিপূর্ণ তথ্যাদি বসাতে হবে। এখানে প্রয়োজন হবে ব্যাংকের সুইফট কোড, সম্পূর্ণ অ্যাকাউন্ট নাম্বার, ব্যাংকের শাখার পূর্ণ ঠিকানা। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনার নাম ও ব্যাংকে আপনার নাম একই হতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার প্রথম ট্রানজেকশন পাঠালে টাকা ব্যাংক এ আসলেই ব্যাংক ভেরিফাই হয়ে যাবে।

আরো পরতে পারেনঃ ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং স্মার্ট ক্যারিয়ার | আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ১
অনলাইনে আয়ের সেরা ১০ উপায় | ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ২
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি | কিভাবে শিখবেন | ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *