ব্রন কি ও ব্রন থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে এর আগে এই পোস্ট এ লিখেছি। চেহারার সোন্দর্য নস্ট করার অন্যতম কারণ ব্রন। অনেক সময় অনেক চেস্টার পরও মুখে ব্রন হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়না। এই ব্রন থেকে পরবর্তিতে মুখে দাগ হয়। তাই আজকের এই পোস্ট এ আমরা আলোচনা করব কিভাবে ব্রন দূর করা যায় এবং ব্রন এর দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। চলুন কথা না বারিয়ে শুরু করি। প্রথমে জেনে নি ব্রন থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যায়।
ব্রন ও ব্রণের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
মুখে ব্রন হওয়ার প্রধান কারণগুলো হল হরমোনের স্বাভাবিক পক্রিয়ার বেঘাত, তৈলাক্ত ত্বক, দূশ্চিন্তা বা অবসাদ, ঘুম কম হওয়া সহ আরো নানান কারণে ব্রন হতে পারে। চলুন জেনে নিই ব্রন ও ব্রণের দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় নিয়ে।
শসা
পুস্টিগুন ছাড়াও শসার আরো নানা রকম গুন রয়েছে বিশেষ করে ত্বকের জন্য শসা অত্যন্ত উপকারি জিনিস। শসাতে রয়েছে ত্বকের জন্য উপকারি ভিটামিন এ, ডি, ও ই। এটি ব্রণ কমিয়ে ধীরে ধীরে ব্রণের কালো দাগ দূর করে।
শসার পেস্ট বা রস মুখে লাগালে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়। বাইরে থেকে গিয়ে বা যেকোন সময় শসার পেস্ট বা রস ১৫-২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে মুখ ধুয়ে ফেললে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয় এবং ত্বক লাবন্যময় হয়, ও ত্বক সতেজ হয়।
অথবা শসার পেস্ট বা রস আইস কিউব করে রাখলে সেগুলো মুখে লাগিয়ে একি উপায়ে ১৫-২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে নিলেও উপকার পাওয়া যায়।
তাছাড়া শসাকে গোল গোল করে কেটে তা ঘণ্টা খানেক পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুলে বা শসা ভেজানো পানি খেয়ে নিলে ত্বকের উপকার হয়।
![](https://bdarchives.com/wp-content/uploads/2023/11/bron-dur-korar-upokoron--1024x576.jpg)
বরফ
দ্রুত ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর বরফ।পরিষ্কার নরম সুতি কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে তা ২০-২৫ সেকেন্ড ব্রণের উপর আলতো করে ধরে রেখে তারপর সরিয়ে নিন।কিছুক্ষণ পর একিভাবে আবার রাখুন, এভাবে কয়েকবার করুন।
এই প্রকৃয়াটি দিনে দুইবার করে অনুসরণ করলে দ্রুত ব্রণ ও দাগ কমে যায়, এবং মুখের ত্বক এর কোষ সতেজ হয়।
লেবুর রস ও দারচিনি
লেবুর রস ও দারচিনির পেস্ট দ্রুত ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে এবং ব্রণ এর দাগ দূর করে। দারচিনি গুরা করে পাউডারের মত করে সেটা লেবুর রস দিয়ে পেস্ট করে রাতে ঘুমানোর সময় ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন সারা রাত। সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।দেখবেন ব্রণ কমে যাচ্ছে এভাবে কয়েকবার করলে দেখবেন ব্রণের দাগ ও চলে যাচ্ছে।
অথবা শুধু লেবুর রস বা এর সাথে পানি বা গোলাপজল মিশিয়ে ব্রণে লাগাতে পারেন। এই মিশ্রণে তুলা ভিজিয়ে ব্রণের উপর ১৫-২০ মিনিট রাখুন তারপর ধুয়ে ফেলুন এটিও ব্রন ও দাগ দূর করে।
ব্রণ থাকলে এটি ২-৩ দিন পর পর ব্যবহার করতে পারেন।
কাচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুড়ো
কাচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুড়ো ব্রন ও ব্রণ এর দাগ দূর করতে ভীষণ কার্যকর। কাচা হলুদ পিসে বা ব্লেন্ডারে পেস্ট করে সমপরিমাণ চন্দন কাঠের গুড়ো নিয়ে পরিমাণ মত পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
এই মিশ্রণটি ব্রণের যায়গায় অথবা চাইলে পুরো মুখে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর নরামাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণ না থাকলেও এটি ব্যবহার করতে পারেন। এতেকরে ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় হয়।
ডিম
ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও অ্যামিউনো অ্যাসিড যা দ্রুত ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে ও ত্বকের খসখসে ভাব ও ব্রণের দাগ দূর করে।
ডিমের সাদা অংশ ভাল করে ফেটিয়ে তা রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণের উপর ম্যাসেজ করে লাগিয়ে রাখুন। সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন, দেখবেন ব্রণ কমে গেছে। সারা রাত রাখতে না চাইলে এটি আধা ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেললেও হবে।
ডিমের সাদা অংশের সাথে লেবুর রস মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্রণের দাগ দূর করতে কার্যকরি।
নিম ও তুলশী পাতা
নিম পাতায় আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল গুন আর তুলসির রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা দ্রুত ব্রণ ও এর দাগ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
নিম ও তুলশী পাতার পেস্ট বা রস ব্রণে লাগিয়ে শুকানো পর্যনন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, দেখবেন ব্রণ কমে গেছে।
চাইলে নিম ও তুলশী পাতার পেস্ট বা রস আলাদা আলাদা বা যেকোন একটা ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
টুথপেস্ট
ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা রাখে তুথপেস্ট, বিশেষ করে যাদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত হওয়ার কারণে ব্রণ হয় তাদের। তুথপেস্ট একদিনেই ব্রণ শুকিয়ে দিতে সক্ষম এবং ব্রণের দাগ ও দূর করে এটি।
রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণের উপর তুথপেস্ট লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরুন। সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন দেখবেন ব্রণ অনেকটাই শুকিয়ে গেছে।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কিছু ব্রণ কমাতে ও কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। ব্রণ না হওয়ার জন্য ও কমানোর জন্য নিচের নিয়মগুলো অনুষরন করলে উপকার পাবেন।
- প্রর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, অর্থাৎ অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা।
- ভাজা-পোরা বা জাংক ফুড না খাওয়া।
- পরিমাণ মত ফল খাওয়া, কারণ ফল এর পুষ্টিগুন ত্বকের কোষকে সতেজ রাখে।
- সব সময় মুখ বা ত্বক পরিষ্কার রাখা। বাইরে থেকে এসে ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলা। বাইরে না গেলেও প্রতিদিন ৪-৫ বার প্রতিদিন মুখ ধোয়া উচিত। তার মধ্যে ২ বার ফেসওয়াশ দিয়ে ধোয়া উচিত।
- ময়লা বা জীবাণু থাকতে পারে এমন তোয়ালে বা কাপড় মুখে না লাগানো। পরিষ্কার তোয়ালে বা টিসু দিয়ে মুখ মুছা। এবং সম্ভব হলে প্রত্যেকের আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত।
- মুখে ব্রণ বা কোন ধরনের গোটা হলে তা নখ বা অন্যকিছু দিয়ে খুঁটানো উচিত নয়। এতে করে ব্রণ বারে বৈ কমেনা।
- ব্রণ বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ব্রণ কম হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন চাইলে।
আরও পরুনঃ
ছাদে বাগান করার উপকারিতা
ছাদ বাগান করার সহজ পদ্ধতি
মুখ ফর্সা ও লাবণ্যময় করার উপায়