টবে কামিনী ফুল এর চাষ

কামিনী ফুলের ইংরেজি নাম Orange Jessamine.  এর বৃক্ষ ক্রান্তীয় এবং চিরহরিৎ  উদ্ভিদ। যা আকারে ছোট এবং সুগন্ধযুক্ত সাদা ফুঁল জন্ম দেয়। কামিনী ফুল বীরসার ও একাঙ্গী নামেও পরিচিত। কামিণী ফুলে আকৃষ্ট হয়ে অনেকে অনেক পদ্য রচনা করেছেন। তন্মধ্যেঃ

কামিনী কি একটি ঝড়ে যাওয়া ফুল
না কামিনীর জন্মানোই ভুল
কামিনী একটি সুবাসিত ফুল,
যা সু-ঘ্রাণ ছড়াতে করেনা ভুল

কামিনী ফুলটি ছিল গাছে সুরক্ষিত
কিন্তু মানবজাতি তা করলো ক্ষত-বিক্ষত
কামিনী ফুলের সুবাসে মুখরিত ছিল চারিপাশ
ভোমরারা ঘুরতো আশপাশ।

লিমটন

কামিণী ফুলের গুরুত্ব ও ব্যবহার

টবে কামিনী ফুল লাগিয়ে বাড়ির, উঠানের, বারান্দার, ছাদের সৌন্ধর্য বৃদ্ধি করা হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিয়ে বাড়িতে এই ফুলের পাতা ব্যবহার করা হয়। কামিনী পাতার অসাধারণ বিন্যাস সবাইকে দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করে। এছাড়াও এর ফুল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। বেদনা নাশক হিসেবে এর ব্যপক ব্যবহার রয়েছে।

কামিণী ফুল কোথায় কখন ফুটে

দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল, বাংলাদেশ,  ভারত, থাইল্যান্ড,  চীন এবং মালেশিয়া তে এই ফুল বেশী জন্মে।  প্রায় সব সময় এই ফুল ফুটলেও গ্রীষ্ম থেকে শরৎ কালে এই ফুল অধিক জন্মে। গাছের নীচে ঝড়ে পড়া কামিনী ফুল গুলো সব বয়সের মানুষকে অনেক বেশী আকৃষ্ট করে।

কামিণী ফুলের বৈশিষ্ট্য

এর বৃক্ষ ক্রান্তীয় এবং চিরহরিৎ  উদ্ভিদ। যা আকারে ছোট এবং সুগন্ধযুক্ত সাদা ভুল জন্ম দেয়। কামিনী গাছের পাতা দেখতে চকচকে এবং রোশম। এর ফুল গুলো প্রান্তিক ও ঘন হয়ে বাহিরের দিকে ফুটে থাকে।  এই ফুল টি বেশীরভাগ রাতেই ফোটে।  এই ফুলের মধ্যে পাঁচটি পাপড়ি থাকে এবং পাঁপড়ি গুলোর মাঝে একটি হলুদ পরাগ থাকে। ফুল ২-৩ দিন সতেজ হয়ে থাকে।

চিকিৎসায় কামিণী ফুলের ব্যবহার

আমাশয় রোগে গাছের মূল খুব উপকারী। কামিনী পাতার গুড়ো দিয়ে কাটা অথবা ছেড়ার রক্ত বন্ধ করা যায় এবং ব্যাথাও কমে যায়। এর পাতা বেটে তেলে জাল দিয়ে মালিশ করলে শরীর ব্যাথা কমে যায়। পাতা গুড়ো করে নস্যি নিলে হাঁচির সাথে সর্দি বেরিয়ে যায়।

কামিণী ফুলের রং

এর ফুলের রং হয় সাদা। যার মাঝে থাকে হলুদ পরাগ। আর ফল হয় কমলা থেকে লাল বর্ণের।

কামিণী ফুলের জন্য টব

কামিনী গাছের জন্য আকারে বড় টব প্রয়োজন।  বীজ থেকে অথবা গুটি কলম করে এর চারা সংগ্রহ করে টবে লাগাতে হবে।

কামিণী ফুলের জন্য মাটি

এই ফুলের জন্য দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ মাটি উত্তম। এর জন্য আদ্র মাটি প্রয়োজন তবে মাটি যেন খুব বেশী আদ্র না হয়। কাদা কাদা মাটিতে এর ফালো ফলন পাওয়া যাবে না। নিয়মিত পানি দিতে হবে, তবে মাটি স্যাতস্যাতে হলে পানি দেওয়া কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখতে হবে। কিছু সময় ছায়া থাকে এমন স্থান নির্বাচন করা উচিত হবে। মাটির সাথে অল্প সিলেকশন বালি, হাড়ের গুড়া, ছাই ভালোভাবে মিশিয়ে মাটি তৈরী করতে হবে।  এছাড়া কম্পোস্ট সার, গোবর, টিএসপি সার মেশানো উত্তম। চাপান সার এবং তরল সার ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

কামিণী ফুল গাছের পরিচর্জা

গাছে পানি দেওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুই  সপ্তাহ পর পর মাটি খুঁচিয়ে দিতে হবে। এই গাছে রোগ ও পোকার আক্রমন খুব কম হয় তাই খুব বেশী পরিচর্চার প্রয়োজন নাই। অল্প পরিচর্চায় ও খুব ভালো ফলন পাওয়া যায়। গাছ বড় হলে ডাল ছেটে দিতে হবে।

আরো পরুনঃ

টবে গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি
নয়নতারা গাছের উপকারিতা, রোপণ ও পরিচর্যা
টবে শিউলি ফুল চাষ
টবে কৃষ্ণচূড়া ফুল চাষ
টবে জবা ফুলের চাষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *