শিউলি ফুলের ইংরেজি নাম Night-Flowering Jasmine. এটিকে অনেকে শেফালী নামেও চিনে। এটি রাতের বেলায় ফুটে এবং দিনের আলোতে নিজের উজ্জলতা হারায় তাই এটি “Tree of Sorrow” নামেও পরিচিত। কোরাল জেসমিন, হরসিংগার, পরিজাত, রাগাপুষ্পী, মালিকা, প্রজক্তা ইত্যাদি নামেও এটি পরিচিত। শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি সকলের ই খুব প্রিয়।
কবি দের ভাষায়-
আজি শরত তপনে প্রভাত স্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়
ওই শেফালির শাখে কী বলিয়া ডাকে বিহগ বিহগী কী যে গায় গো
আজি মধুর বাতাসে হৃদয় উদাসে, রহে না আবাসে মন হায়
কোন কুসুমের আশে কোন ফুলবাসে সুনীল আকাশে মন ধায় গো।
শিউলি ফুলের মালা দোলে শারদ-রাতের বুকে ঐ
এমন রাতে একলা জাগি সাথে জাগার সাথি কই…।
শিশির ভেজা ফুল ঝরেছে
শিউলি গাছের তলে
কে কে যাবি ফুল কুঁড়াতে
আয় ছুটে দলবলে
শিউলি ফুলের ব্যবহার
বিভিন্ন পুজোতে এই ফুল ব্যবহার করা হয়। তাই এটিকে পুজোর ফুল ও বলা হয়। সৌন্ধর্য বৃদ্ধির কাজেও শিউলি ফুল ব্যবহার করা হয়। শিউলি ফুলের মালা খুবই প্রচলিত। আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরীতে এই ফুলের নির্জাস ব্যবহার করা হয়।
চিকিৎসায় শিউলি ফুলের ব্যবহার
সাইটিকার ব্যাথায়, আর্থারাইটিস এর ব্যথায়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এর পাতা খুব উপকারী।
কোথায় ও কখন শিউলি ফুল ফুটে
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, মায়ানমার এবং থাইল্যান্ড এই অঞ্চল গুলোতে এই ফুল দেখা যায়। সাধারণত শরৎ এবং হেমন্তে এই ফুলটি অধিক দেখা যায়।
শিউলি ফুলের রং
প্রায় ৬-৭ টি সাদা পাপড়ি থাকে শিউলি ফুলে। আর বৃত্তটি হয় কমলা রংয়ের।
শিউলি ফুলের বৈশিষ্ট্য
ছোট আকারের বহুবর্ষজীবী এবং বৃক্ষজাতীয় গাছ থেকে হয় শিউলি ফুল। এর ফল সাধারণত চ্যাপ্টা আকৃতির হয়। ফুল ধরে শাখা প্রশাখা গুলোর অগ্রভাগে। এর ফুল আকারে ছোট এবং সুগন্ধ যুক্ত। ফুল রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়।
শিউলি ফুলের জন্য টব
শিউলি ফুল চাষের জন্য ১০-১২ ইঞ্চি টবের প্রয়োজন হয়। গুটি কলম করে অথবা সরাসরি বীজ থেকে এই চারা সংগ্রহ করে রোপণ করা যায়।
শিউলি ফুলের জন্য মাটি তৈরী
শিউলি ফুলের জন্য দোঁআশ বা বেলে দোঁআশ মাটি উত্তম। মাটির সাথে অল্প সিলেকশন বালি, হাড়ের গুড়া, ছাই ভালোভাবে মিশিয়ে মাটি তৈরী করতে হবে। এছাড়া কম্পোস্ট সার, গোবর, টিএসপি সার মেশানো উত্তম। চাপান সার এবং তরল সার ব্যবহারে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বর্ষাকাল থেকে হেমন্তকাল পর্যন্ত তরল সার প্রয়োগ করা উত্তম।
শিউলি ফুল গাছের পরিচর্চা
গাছে পানি দেওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুই সপ্তাহ পর পর মাটি খুঁচিয়ে দিতে হবে। গাছের গোড়ায় স্যাঁতস্যাঁতে ভাব হলে কলি ঝরে পড়তে পারে। গাছ বড় হলে ডাল ছেটে দিতে হবে।
আরো পরুনঃ
টবে গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি
ছাদে বাগান করার উপকারিতা
ছাদ বাগান করার সহজ পদ্ধতি
নয়নতারা গাছের উপকারিতা, রোপণ ও পরিচর্যা
টবে জবা ফুলের চাষ