একটা সময় মানুষ পায়ে হেটে, উট, ঘোড়ায় চড়ে একদেশ থেকে অন্য দেশে যেত। ব্যবসা বানিজ্য, প্রশাসনিক কাজের জন্য এই যাত্রায় মাসের পর মাস কেটে যেত। আর এখন সকালে ব্রেকফাস্ট একদেশে করে লাঞ্চ অন্য দেশে করা যাচ্ছে। চাইলে ডিনারও হয়তো তৃতীয় কোন দেশে করা যায়। ছয় মাসের কাজ করা যাচ্ছে একদিন কিংবা দুইদিনে। কিন্তু এই বেচে যাওয়া সময়টা যাচ্ছে কোথায়? অতিরিক্ত কি করছি আমরা?
দূরের কোন প্রিয়জনের একটা খবর পাওয়ার জন্য, একটা চিঠির জন্য আমরা মাসের পর মাস অপেক্ষা করতাম। আর এখন ইন্সট্যান্ট সবাই সবাইকে দেখছি, কথা বলছি। দুরত্বকে আমরা অলমোস্ট জয় করে ফেলেছি। মোবাইল আর ইন্টারনেট প্রযুক্তি আমাদের সেই সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু……
এক তাজমহল বানাতে বিশ হাজার লোকের ২০ বছর লেগেছিল। এখন চাইলে হয়তো এমন একটা ইমারত ২০ জন লোক ২০ দিনেই করে ফেলতে পারবে। 3D প্রিন্টিং প্রযুক্তি সেটা সম্ভব করেছে।
জীবন জীবিকার, আনন্দ-প্রমোদের, রোগ-শোকের সব কাজেই আমরা এখন সুপার ফাস্ট। প্রযুক্তি আমাদের এই ফাস্ট বানিয়েছে। চোখের পলকে, আঙ্গুলের ইশারায় আমরা এখন এমন অনেক কাজ করে ফেলছি যা করতে হয়তো একসময় আমাদের দিনের পর দিন লেগে যেত।
সমস্যা হলো প্রযুক্তি প্রযুক্তিকে ছাপিয়ে যায়। আজকের প্রযুক্তি গতকালের প্রযুক্তি থেকেও বেশী ফাস্ট। আর আজকের দিনে টিকে থাকার জন্য আমরা গতকালের প্রযুক্তি নিয়ে বসে থাকিনা। আজকের প্রযুক্তির সাথেই তাল মেলানোর চেষ্টা করি। আর তাই আমরা দিন দিন ফাস্ট থেকে ফাস্টার হচ্ছি।
কিন্তু এত ফাস্ট হয়ে আসলে কি হচ্ছে? ছয় মাসের কাজ ছয় দিনে করেও আমরাতো একটু বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছিনা। দিন রাত ব্যস্ত থাকছি। এত এত উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েও আমরা কাজ শেষ করতে পারছিনা। অথচ আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্মেরাতো এত কাজের চাপে ভূগতেননা। তাদের গতি ধীর ছিল কিন্তু তারা মুক্ত ছিলেন। তারা বিশ্রামের সুযোগ পেতেন। আমরা এখন সকাল থেকে মধ্যরাত কাজ করেই যাচ্ছি, তবুও কাজ শেষ হয়না।
প্রযুক্তি এমন একটা ট্রেন যার কোন ব্রেক নেই, সে থামতে জানেনা। যার গতি প্রতি মুহূর্তে বেশী থেকে বেশী হচ্ছে। আর আমরা মানুষেরা সেই ট্রেনে বসে ভাবছি আমরা খুব দ্রুত সামনে যাচ্ছি। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমরা কোথায় যাচ্ছি? তাহলে হয়তো আমরা কেউই উত্তর দিতে পারবোনা। আমাদের কোন গন্তব্য নেই। প্রযুক্তি ট্রেনের মধ্যে বসে আমরা ভাবছি এই ট্রেন আমরা চালাচ্ছি। কিন্তু না, বাস্তবতা হলো প্রযুক্তি আমাদেরকে তার মধ্যে আটকে নিয়ে ছুটে চলছে, আমরা প্রযুক্তির বন্দী। এই বন্দীদশা থেকে আমরা শুধু তার ইঞ্জিনে জ্বালানি দিয়ে যাচ্ছি। সে এগিয়ে যাচ্ছে তার নিজের গতিতে। আমাদেরকে নিয়ে। যাবৎজীবন কারাদন্ডের মত, আমাদের কোন মুক্তি নেই।
মূল কথায় আসি।
এতদিন প্রযুক্তি শুধুমাত্র আমাদের শারীরিক শ্রম লাঘব করেছে। কম পরিশ্রমে বেশী কাজ করতে সাহায্য করেছে। কিন্ত বর্তমানে প্রযুক্তি ধীরে ধীরে আমাদের বুদ্ধিমত্তার স্থানও দখল করে নিচ্ছে। লিখালিখি, ছবি আকার মত ক্রিয়েটিভ কাজগুলো যা মানুষের নিজস্ব ছিল তা এখন প্রযুক্তি দিয়ে করা যাচ্ছে। মিডজার্নি এআই, ডালে ২.০ বা হালের চ্যাট জিপিটি আমাদের অনেক ক্রিয়েটিভিটির জন্য শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে। দিন দিন সে আরো নিখুঁত হবে সন্দহ নেই। ওই যে বললাম না, নিজেদের টিকিয়ে রাখতে আমাদের এখন এই প্রযুক্তির সাথেও আপোষ করে নিতে হবে। আমাদেরকে এখন থেকে আরো গতিতে ছুটতে হবে।
এআই এমন এক প্রযুক্তি যে নিজেকে নিজে আপডেট করতে পারে। এতদিন মানুষ প্রযুক্তির ইঞ্জিনে জ্বালানি দিয়েছে, এখন থেকে নিজের জ্বালানি সে নিজে জোগাড় করতে পারবে। তার গতি আরো অপ্রতিরোধ্য হবে নিশ্চিত।
আমরা মানুষেরা কি করবো?
আমাদের গতি আরো বাড়বে। তারপর?
আরো বাড়বে… তারপর?
আরো … আরো…
একদিন হয়তো আবিষ্কার করবো, আমরা আর মানুষ নেই। আমরা যন্ত্র হয়ে গেছি। আমরা শুধু কাজ করে যাচ্ছি। যন্ত্রের মত আমাদের কোন বিশ্রাম নেই।
ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং স্মার্ট ক্যারিয়ার | আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ১
অনলাইনে আয়ের সেরা ১০ উপায় | ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ২
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি | কিভাবে শিখবেন | ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আল্টিমেট গাইডলাইন পার্ট ৩
Incredible article! You have a talent for explaining complex topics in a way that’s easy to understand. I really appreciated the examples you used. They helped me grasp the concepts much better. Keep up the great work!
You have a real talent for writing content that’s both informative and enjoyable to read.