বেলি ফুলের ইংরেজি নাম “Arabian Jasmine“. যার বৈজ্ঞানিক নাম। “Jasminum Sambac”। এটি খুব বেশী সুগন্ধি যুক্ত সাদা রং এর ফুল। এর মিষ্টি সুগন্ধি মানুষকে খুব বেশী আকৃষ্ট করে।
ফেব্রুয়ারী মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত গাছে বেলী ফুল ফোটে। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় প্রতিটি থোকায় অনেকগুলো ফুল ফোটে। ফুল গুলো ছোট, মাঝারি, বড় বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে।
বেলি ফুল গাছের উচ্চতা ও জাত ভেদে ১ -২.৫ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই গাছের ডাল গুলো কচি এবং রোমশ হয়ে থাকে। পাতা ৪-৮ সেমি লম্বা হয় এবং একক ডিম্বাকার হয়। পাতার রং গাঢ় সবুজ এবং মসৃণ হয়।
বেলি ফুলের জাত বা প্রকারভেদ
বেলী ফুলের জাত সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে-
১. সিঙ্গেল ধরনের – এই জাতের বেলি ফুল অধিক গন্ধ যুক্ত হয়।
২. ডাবল ধরনের – এই ধরনের ফুল আকারে মাঝারি হয়ে থাকে।
৩. বৃহদাকার ডাবল – এই ধরনের ফুল আকারে কিছুটা বড় হয়।
বেলি ফুল নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গান ও কবিতা। তন্মধ্যে একটি-
প্রিয় বেলীফুল,
খুব ইচ্ছে ছিলো তোমায় নিয় একটা কবিতা লিখবো,
কিন্তু শব্দরা তোমার মত ফুটতে চাচ্ছেনা।
শব্দগুলো আজকাল বড্ড বেশী বেয়ারা হয়ে গেছে,
শব্দগুলো তোমার সাথে নাকি আমার সাথে বেইমানি করছে।
কিছুই বুঝে উঠে পারছিনা?
আমায় ক্ষমা করো বেলী ফুল,
বিশ্বাস করো আমি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী
তোমার সৌন্দর্যে আমি মাতোয়ারা।
বেলীফুল,
তবুও বলছি-
আমার ভালোবাসা নিও,
আর মাঝে মাঝে তোমার সৌরভ আমায় দিও।
তোমার ছোঁয়া দিও, তোমার ভালোলাগা দিও।
শব্দগুলোকেও তুমি তোমার সৌরভে মাতাল করে দিও,
একদিন শব্দগুলো,ছন্দগুলোও আমার মতই তোমার প্রেমের পড়বে,
হয়তো সৃষ্টি হবে অমর কোন কবিতা।
বেলি ফুলের ব্যবহার ও গুরুত্ব
ফুলের মালা ও ফুলের তোড়া তৈরীতে এই ফুল সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়। বাগান, বারান্দা ও ছাদের সৌন্ধর্য বর্ধনে এই ফুলের গুরুত্ব অনেক। তেল তৈরীতে এই ফুল ব্যবহৃত হয় এবং বেলি ফুল দিয়ে তৈরী কৃত তেল অনেক বেশী জনপ্রিয়।
টবে বেলি ফুল চাষ এর পদ্ধতি
টব নির্বাচন
বেলি ফুল চাষের জন্য যে কোন আকারের টব হলেই হয়। তবে মাঝারি আকারের টবে বেলি ফুল চাষ উত্তম। নার্সারি থেকে চারা কিনে টবে এই গাছ লাগানো যায়। গুটি কলম, ডাল কলম, দাবা কলম ইত্যাদি মাধ্যমে এই গাছের বংশ বিস্তার ঘটে। কলম দিয়ে চাষ করতে হলে বর্ষার শেষ হচ্ছে উপযুক্ত সময়।
মাটি নির্বাচন
বেলে মাটি ব্যতিত প্রায় সব মাটিতে বেলী ফুলের চারা রোপন কিরা যায়। তবে যেই দোঁ আশ মাটিতে জৈব পদার্থ যুক্ত আছে সেই মাটিতে বেলী ফুল চাষে অধিক ফলন পাওয়া যায়। টবে নিয়মিত পানি দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং টবের নীচে ছিদ্রি করে অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। মাটি ঝুরঝুরে করে টবে ভরতে হবে। মাটিতে ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি সার পরিমান মতো মিশিয়ে তারপর টবে মাটি ঢুকাতে হবে। প্রতিটি টবের মাঝে কিছুটা দূরত্ব রাখতে হবে।
সার প্রয়োগ
পরিমাণ মত জৈব সার, ইউরিয়া সার, ফসফেট এবং এমপি সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
পোকামাকড় দমন
এই ফুলের ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ খুব কম হয়৷ কিন্তু মাকড় আক্রমণ হতে পারে। তখন পাতায় সাদা আস্তরণ পড়ে অথবা পাতা গোল পাকিয়ে যায়। সালট্যাফ, কেলথেন ছিটিয়ে এই মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পাতায় ছত্রাক আক্রমণ করতে পারে। তখন পাতায় হলদে রংয়ের দাগ হয়। এগ্রোসান অথবা ট্রেসেল ২ প্রয়োয়ে ছত্রাক দূর হয়।
পরিচর্যা
নিয়মিত পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টবের গোড়ায় আগাছা জন্মালে তা পরিষ্কার করতে হবে। এক বছর পর পর ডাল ছাটাই করে দিতে হবে৷ এই ছাটাই শীতে হলে উত্তম। ছাটাইয়ের পর টবে সার প্রয়োগ করতে হবে।
আরো পরুনঃ
টবে জুঁই ফুল চাষ এর পদ্ধতি
টবে কাঠগোলাপ চাষ
টবে হাসনাহেনা ফুলের চাষ
টবে শিউলি ফুল চাষ
টবে কৃষ্ণচূড়া ফুল চাষ
টবে কামিনী ফুল এর চাষ
টবে জবা ফুলের চাষ
মাইগ্রেন কি? কেন হয় | চিকিৎসা ও প্রতিকার
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়